২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৩:৫২

খাঁ খাঁ রোদেও পানিতে সয়লাব চট্টগ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চট্টগ্রামের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদের রাজপথে শনিবার বেলা ১১টার দিকে থৈ থৈ পানি। সকাল থেকে কোনো বৃষ্টি না পড়লেও খাঁ খাঁ রোদে পানিতে সয়লাব সড়ক ও অলিগলি। এ রকম দৃশ্য এখন আর নতুন কিছু নয়। সকালের জোয়ারের পানি কর্ণফুলী নদী থেকে নগরীতে প্রবেশ করেছে মহেশখাল দিয়ে। তাতেই কোথাও কোথাও হাঁটু পানি আগ্রাবাদের সঙ্গে বড়পুল পর্যন্ত আসা এক্সেস রোড়ে।

এর পাশাপাশি মহেশখালের পাড়ে অবস্থিত নগরীর তিনটি ওয়ার্ডেও পানি প্রবেশ করেছে। পানির কারণে ব্যস্ততম সড়কে যানজটও লেগে গেছে ভয়ানকভাবে। আগ্রাবাদ এক্সেস রোড এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী এমএ কাদের বলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পানি আসা শুরু হয়েছে এক্সেস রোড়ে। যার কারণে আফিসগামী যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।

‘এখন নিয়মিত জোয়ারের পানি চলে আসে এখানে। মহেশখাল দিয়ে এক্সেস রোড়ের পাশের শান্তিবাগ, বেপারীপাড়া ছোটপুল, বড়পুল এসব স্থানে বৃষ্টি হোক বা না হোক প্রতিদিন দু’বেলা করে জোয়ারের পানি আসছে’ উল্লেখ করেন ব্যবসায়ী কাদের।

সেখানকার আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, জোয়ারের পানির কারণে আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা ও আশপাশের প্রতিটি বাড়ির নিচতলা এখন বলতে গেলে আর বসবাসের উপযোগী নেই। এখানে জোয়ারের পানির ভোগান্তি নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত দশ বছর ধরে জোয়ারের পানি প্রবেশ করলেও এ বছর এটা ভয়ানক আকার ধারণ করেছে বলে মনে করেন মাহফুজুর রহমান। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর কমপক্ষে ১০ শতাংশ স্থানে নিয়মিত জোয়ারের পানি প্রবেশ করে। ছয়টি এলাকার ১৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা জোয়ারের ঝুঁকিতে আছে।

জোয়ারের পানির প্রবেশ ঠেকানোর জন্য দুই বছর আগে বন্দর এলাকায় একটি বাঁধ দিয়ে মহেশখালের প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এতে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়াতে এলাকায় জলাবদ্ধতা স্থায়ী রুপ নেয়। পরে পরিবেশবিদ ও স্থানীয়দের বাধার মুখে গত জুন মাসে ওই বাঁধ ভেঙে দিতে বাধ্য হয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লেফটেনেন্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ছয়টি এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করলেও সবচেয়ে বেশি পানি উঠে আগ্রবাদ এক্সেস রোড এলাকায়। অন্য এলাকাতে বৃষ্টি না থাকলে তেমন সমস্যা হয় না। তবে আগ্রাবাদে এটা বর্ষা মৌসুমে অনেকটা স্থায়ী রুপ নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মহেশখালের তীরবর্তী কিছু এলাকা এখন প্রতিদিন দু’বার করে জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়। এটার আপাতত কোনো সমাধান নেই।’ মহিউদ্দিন বলেন, ‘মহেশখালের বাঁধ কেটে দেওয়াতে পানি সরাসরি নগরীতে প্রবেশ করে। অবশ্য বাঁধ না থাকায় পানি দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে নেমেও যায়।’

তিনি আরও বলেন, মহেশখালের মুখে কর্ণফুলী নদীতে একটি স্লুইসগেইট রেগুলেটার দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বন্দর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। বন্দর কর্তৃপক্ষ এই রেগুলেটার নির্মাণে অর্থায়ন করার কথা আছে। আগ্রবাদ ছাড়াও জোয়ারের পানিতে নগরীর বাকলিয়া এলাকাও নিয়মিত নিমজ্জিত হয়। সেখানেও এলাকাবাসীকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে জানান মহিউদ্দিন।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :আগস্ট ১৯, ২০১৭ ২:১৬ অপরাহ্ণ