নিজস্ব প্রতিবেদক:
কল্যাণপুর পোড়াবস্তির তিন সহস্রাধিক শিশু এগিয়ে যাচ্ছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। হতদরিদ্র পরিবারের শিশুগুলো পাচ্ছে না বাবা-মায়ের যত্ন, অন্যদিকে মারমুখী পরিবেশ থেকে পাচ্ছে উশৃঙ্খলতার শিক্ষা। দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষা বঞ্চিত ও মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পরা শিশুর সংখ্যা অনেক। রাজধানীর কল্যাণপুরের পোড়াবস্তিতেই শুধু এই সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। স্বল্প আয়ের এই পরিবার গুলোতে যেখানে প্রতিদিন খাবারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে সন্তানের সুশিক্ষা নিশ্চিত করা তো অসম্ভব।
প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের জন্য বস্তিটিতে রয়েছে প্রায় ১২-১৪ টি স্কুল। ব্রাক, ইউনিসেফ এর মত আন্তর্জাতিক সংস্থার অর্থায়নে চলছে স্কুলগুলো। রয়েছে মান সম্মত শিক্ষাব্যবস্থা ও তদারকি। কিন্তু স্কুলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই বললেই চলে।
ইউনিসেফ পরিচালিত সুরভী স্কুলে গিয়ে দেখা যায় ত্রিশজন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুইজন উপস্থিত। এর কারণ জানতে চাইলে সুরভী স্কুলের শিক্ষক মাসুদ রানা জানান, ‘এখানে যারা পড়ে তাদের বাবা-মা সবাই বাইরে কাজ করে। তাই সন্তানের প্রতি এতটা খেয়াল করার সুযোগ তাদের হয়ে ওঠে না। দেখা যায়, স্কুল টাইমে কে কোথায় বসে আড্ডা দিচ্ছে! বাজে ছেলেদের সাথে মিশছে! খুঁজতে গেলেও এদের পাওয়া যায় না।’
স্থানীয়রা জানান, ছেলেরা অল্প বয়সেই টাকার প্রতি আসক্ত হয়ে পরছে। তাই তারা স্কুলগামী না হয়ে, হচ্ছে লেগুনা ও বাসের হেলপার। কেউ কেউ জড়িয়ে পরছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে। করছে চুরি-ছিনতাই। আট-দশ বছর বয়সেই হয়ে উঠছে ধূমপায়ী। ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত।
বস্তির একটি ক্যারামবোর্ড ঘরে গিয়ে ছয়জন শিশুকে ক্যারাম খেলতে দেখা যায়। তারা প্রত্যেকে নিজেদের ব্রাক স্কুলের ছাত্র পরিচয় দেয়। স্কুলে না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে কেউ বলে, ‘স্কুলে যাইতে ভালো লাগে না’, কেউ বলে, ‘খেলতে ও ঘুরতে ভাল লাগে’।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ