নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় চার বছরের শিশু সুবর্ণা রাণী হত্যা মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আসামিদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের টাকা অনাদায়ে তাদের আরও এক বছরের কারাদণ্ডের দির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।বৃহস্পতিবার ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিতরা হলেন- নিহত শিশু সুবর্ণা রাণীর খালাতো ভাই মানিক কুমার দাস এবং তার বন্ধু প্রকাশ চন্ত্র দাস।
রায় ঘোষণাকালে আসামি মানিক কুমার দাসকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। অপর আসামি প্রকাশ চন্দ্র দাস পলাতক রয়েছেন।
মামলায় জানা যায়, আসামি মানিক কুমার দাস তার খালা রীনা রাণীর বাসায় থাকতেন। তার খালু কাঠমিস্ত্রি ভবদীশ চন্দ্র মৃধার সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। ভবদীশ চন্দ্র মৃধার তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে সুস্মিতাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় মানিক। এরপর থেকে মানিকের চাল-চলন ভালো না লাগায় তাকে বের করে দেন রীনা রাণী। ওই ঘটনার জের ধরে ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর মানিক তার বন্ধু প্রকাশকে নিয়ে তার খালায় বাসায় যায়। রীনা রাণী তাদের নাস্তা দেন। এরপর কোন এক সময় মানিক তার খালাকে খুন করার উদ্দেশ্যে কুড়াল দিয়ে মাথায় আঘাত করে। আঘাতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান রীনা রাণী। এরপর ঘরে থাকা এক লাখ টাকাও নিয়ে যায় তারা। যাওয়ার সময় তাদের দুই কণ্যা শিশু সুবর্ণা রাণী এবং স্বর্ণা রাণীকে পানিতে চুবিয়ে রাখে তারা। কিছুক্ষণ পর রীণা রাণীর জ্ঞান ফিরলে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুবর্ণা রাণীকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় ওই দিনই ভবদীশ চন্দ্র মৃধা বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই থানার এসআই আব্দুল খালেক দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। মামলার তদন্তকালীন আসামি মানিক চন্দ্র স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। মামলার বিচার চলাকালে ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল।
দৈনিক দেশজনতা/এন আর