নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিবাচন কমিশন ‘সম্পূর্ণ স্বাধীন’ ও ইসির পরিচিতি ‘স্বাধীন সত্তা’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কোনো চাপের মুখে পড়ার প্রয়োজন নেই। চাপের মুখে পড়ব না। এ যদি আমাদের শপথ থাকে, এটা যদি আমাদের অঙ্গীকার থাকে- তাহলে চাপের মুখে আমরা কখনো কম্প্রমাইজ করব না; নতি স্বীকার করব না। ইটস এনাফ, আর কোথাও যেতে হবে না। এটা আমার অঙ্গীকার। এ জন্য আপনাদের সাক্ষী রেখেই এ কথাগুলো বলছি।’ রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটে আনতে তাদের মধ্যে ‘সমঝোতা’য় নির্বাচন কমিশনের কোনো ভূমিকা নেই বলেও জানিয়েছেন সিইসি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে দ্বিতীয় ও শেষ দিনে বৃহস্পিতবার গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ সব কথা বলেন তিনি। সকাল সোয়া ১০টায় এ সভা শুরু হয়। দ্বিতীয় দিনের সভায় গণমাধ্যমের ৩৪ জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানায় কমিশন। সেখান থেকে ২২ জন প্রতিনিধি সংলাপে অংশ নেন।
মতবিনিময় সভায় সিইসি বলেন, ‘ভোটে আনতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতায় নির্বাচন কমিশনের কোনো ভূমিকা। দল বা কারো চাওয়া পাওয়ায় ভোটে সেনাবাহিনী নিয়োজিত হবে না।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘ভোটে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। কেউ চাবে, না চাবে তার ওপর হবে না। পরিবেশ পরিস্থিতি যদি মনে করি, সবাই আসবে। দরকার মনে না করলে সেনাবাহিনী আসবে না।’
তিনি জানান, ‘রাজনৈতিক দলের সংলাপে শুধুই আলোচনা হবে, নির্বাচনে কারো আসা না আসার বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে না।’
চাপের মুখে পড়লে কী করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটার সুযোগ নেই। কারো কাছে যদি আমরা আত্মসমর্পণ করি তাহলে এটা আমাদের দুর্বলতা। এটা আমরা করব না। কারণ আমাদের কারো কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।’
সব দলকে নির্বাচনে আনতে ‘মধ্যস্থতার’ ভূমিকা নিতে গণমাধ্যমের সুপারিশের বিষয়ে ইসি কোনো ভূমিকা নেবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘আমার মনে হয় না; আমি নিতে চাই না। এ বিষয়ে আমি একমত না। আমরা সবাই ভুলে যাই- অনেক আন্তর্জাতিক পর্যায়ের মেডিয়েটর এসে আমাদের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসে সমাঝোতায় আসতে পারেনি। সেখানে আমি কেন চাব সে রিস্ক নেওয়ার জন্য, অযথা সময় নষ্ট করার জন্য? এটা আমার কাজ না। ভেরি ফার্মলি-এটা আমার কাজ না।’
এ সময় নিজেদের মতামতের পাশাপাশি প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন সিইসি। চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব, অতিরিক্ত সচিব, জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে এ সংলাপ শুরু হয়। সেদিন ৫৯ জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হলে সেখান থেকে অন্তত ৩৫ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এরপর বুধবার প্রথম দিনে গণমাধ্যমের ৩৭ জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানালে সেখান থেকে ২৬ জন প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে ২০টি প্রস্তাবনা দেন সাংবাদিকরা।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ