নিজস্ব প্রতিবেদক:
বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা না দিয়ে ঢাকায় বসে সরকারের মন্ত্রীরা গায়েবি ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে মকবুল আহমাদ বলেন, বন্যাদুর্গত অঞ্চলের নি:স্ব জনগণ সাহায্যের জন্য হাহাকার করছে। কিন্তু কোনো সাহায্য পাচ্ছে না। মানুষের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠলেও সরকারের টনক নড়ছে না। তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয় দান, খাদ্য, বস্ত্রসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও চিকিৎসা সামগ্রীসহ চিকিৎসক দল পাঠানো প্রয়োজন। ইতোমধ্যেই দেশের উত্তরাঞ্চলের ২৮টি জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। দেশের এক তৃতীয়াংশের অধিক এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের মধ্যাঞ্চলের দিকে বন্যা ধেঁয়ে আসছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন জেলা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যাদুর্গত অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। তাদের দ্রুত উদ্ধার করে উঁচু স্থানে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা দরকার। অনেক এলাকায় মৃত মানুষকে কবর দেয়ার মত জায়গাও পাওয়া যাচ্ছে না। বন্যাদুর্গত অঞ্চলের মানুষ পানি বাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। খাদ্য, বস্ত্র ও চিকিৎসার অভাবে বন্যাদুর্গত অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয়ে দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই ১০৭ জন মানুষ বন্যার করাল গ্রাসে নিহত হয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গিয়েছে ৩ লক্ষ হেক্টর জমির বিভিন্ন উঠতি ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক, গরু ব্যবসায়ী ও গরুর খামারীদের প্রায় ১১ লক্ষ গরু এবং মহিষ, ছাগল, ভেড়া, হাঁস-মুরগীসহ ৪৩ লক্ষ গৃহপালিত পশু-পাখি।
তিনি বলেন, বন্যাদুর্গত মানুষ ও গৃহপালিত পশু-পাখীদের উদ্ধার করে আশ্রয় দান, তাদের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, শিশু খাদ্য, বিশুদ্ধ পানীয়সহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী সরবরাহ ও দুর্গত রুগ্ন লোকদের চিকিৎসার জন্য সরকারের কোনো কার্যকর উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সরকারের মন্ত্রীগণ রাজধানী ঢাকায় বসে গায়েবি ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছেন যে, ‘বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ-সামগ্রীর কোকনো অভাব হবে না।’ বাস্তব অবস্থা সম্পূর্ণ উল্টো। মন্ত্রী ও সরকারি দলের পক্ষ থেকে কোনো ত্রাণ তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এ সরকার যেহেতু জনগণের নির্বাচিত নয়, সেহেতু জনগণের দুঃখ দুর্দশা নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। অথচ বন্যাদুর্গতদের সাহায্য করার প্রধানতম দায়িত্ব বর্তমান সরকারের।
তাই বন্যাদুর্গত লোকদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, শিশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীয়সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী এবং ওষুধসহ চিকিৎসক দল পাঠানোর জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে বন্যাদুর্গত অঞ্চলের জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের সাহায্য নিয়ে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি নির্দেশ দিচ্ছি।
বন্যায় যারা নিহত হয়েছেন আমি তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের শোক সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। সেই সাথে নিহতদের পরিবার-পরিজন ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ