নিজস্ব প্রতিবেদক:
বছর দেড়েক আগে সাতক্ষীরায় এসেছিলেন বিমান ও পর্যাটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি। তিনি সাতক্ষীরা ডিসি অফিসে পর্যাটন বিষয়ে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য বলেছিলেন, যশোর বিমান বন্দর থেকে নেমে গাড়ি যোগে সাতক্ষীরায় আসতে আমার কোমরে ব্যথা হয়ে গেছে, আমি আর এ পথ দিয়ে যেতে চাই না। মন্ত্রীর কথার পর আজও সংস্কার করা হয়নি যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক। শুধু যশোর-সাতক্ষীরা সড়ক নয় জেলায় প্রত্যেকটি সড়কেরই বেহাল অবস্থা। সুশীল সমাজের দাবী সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী একবারের জন্য হলেও সাতক্ষীরা থেকে ঘুরে যাওয়ার জন্যে।
জেলায় সড়ক-মহাসড়কের বেহাল দশায় বিশ লাখ মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। বেহাল সড়কে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে জেলার বিশ লক্ষাধিক মানুষ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপর আস্থা হারিয়েছে।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাব ও সাম্প্রতিক বর্ষণে সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ সড়ক, সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়ক, সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কসহ সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রত্যেকটি অভ্যন্তরীণ সড়কও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কগুলোর পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সড়কের পিচ, খোয়া ও পাথর উঠে গিয়ে কাদা-মাটিতে পরিণত হয়েছে। এতে ভেঙ্গে পড়েছে সাতক্ষীরার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। যা জেলার ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সকল সম্ভাবনা ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে ম্লান করে দিচ্ছে।
আশাশুনির রফিকুজ্জামান জানান, সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয় না। সাম্প্রতিক বর্ষণে সড়কের পিচ-খোয়া ধুয়ে গিয়ে কাদায় পরিণত হয়েছে। এতে চলাচল দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই।
সাতক্ষীরা পৌরসভার বাসিন্দা আমিনুর রহমান আলম জানান, পৌরসভার একটি সড়কও ভাল নেই। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও নাগরিক সেবা চতুর্থ শ্রেণির মতো। কিন্তু দেখবে কে?
বাস ড্রাইভার আবদুল আজিজ জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে। সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়কে বাস চালালে প্রতিদিন গাড়ি মিস্ত্রী দেখাতে হয়। ডেমারেজ দিতে হয়। কারো কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
নিরাপদ সড়ক চাই সাতক্ষীরা শাখার সাধারণ সম্পাদক মহিদার রহমান জানান, সাতক্ষীরায় সড়ক তো নয় যেন মৃত্যুপুরী। গত এক যুগ যাবত কোনো সড়ক সংস্কার করা হয় না। এতে জনদুর্ভোগ আকাশ ছুঁয়েছে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি বলেছেন, জেলায় সড়কের যে অবস্থা এটা খুবই খারাপ। চলাচলের অনুপযোগী রাস্তার কারণে সরকারের সকল উন্নয়ন এখানে অম্লান হয়ে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল করিম জানান, জেলায় ২৭২ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। ইতোমধ্যে পৌরসভার রাস্তাগুলো সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে তবে বর্ষার জন্যে ঠিকাদার কাজ করতে পারছে না। এছাড়া মহাসড়কে নতুন অর্থবছরে বরাদ্দ এখনও পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেলে কাজ শুরু হবে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ