নিজস্ব প্রতিবেদক:
নওগাঁয় ফসলি জমিতে দিন দিন কৃষিবান্ধব ধৈঞ্চা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এই ধৈঞ্চা ফসলি জমির উর্বরতা শক্তি ও সবুজ সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষকরা এই ধৈঞ্চা চাষের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারছেন। জানা যায়, রাসায়নিক সারের ব্যবহার হ্রাস করার প্রত্যয়ে জেলার কৃষকরা বর্তমানে ধৈঞ্চা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এ বছর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বিগত বছরের তুলনায় বেশি পরিমাণ ধৈঞ্চা চাষ হয়েছে।
জ্যৈষ্ঠ মাসে বোরো ধান কাটার পর ফাঁকা জমিতে ধৈঞ্চার বীজ ছিটিয়ে দেওয়া হয়। দুই থেকে তিন হাত লম্বা হওয়ার পরেই কৃষকরা জমিতেই চাষ দিয়ে তা পচিয়ে সবুজ সার হিসেবে ব্যবহার করেন। দেখতে কিছুটা সোনালি আঁশ পাটের মতো হলেও আগে এই এলাকায় ধৈঞ্চার ব্যবহার শুধু জ্বালানি কাজেই বেশি ব্যবহৃত হতো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এক বিঘা জমিতে ধৈঞ্চা চাষে মাত্র ৮শ’ টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘা জমির ধৈঞ্চা প্রায় ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন চাষিরা। রাসায়নিক সার ব্যবহার কমিয়ে ধৈঞ্চা চাষে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জেলার বিভিন্ন এলাকায় লাইভ পাচিং হিসেবে আফ্রিকান ধৈঞ্চা চাষ ও ব্যবহার বিষয়ে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছে।
রানীনগর উপজেলার ছয়বাড়িয়া গ্রামের কৃষক এনামুল হক জানান, তিনি পূর্বে এই ধৈঞ্চার উপকারিতা সম্পর্কে জানতেন না। এবার কৃষি অফিসের সহায়তায় তিনি প্রতিটি জমিতে সবুজ সার হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রায় ৬ বিঘা জমিতে ধৈঞ্চার আবাদ করেছেন।
বগাড়বাড়ি গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম অনেক দিন ধরেই ফসলি জমিতে ধৈঞ্চার আবাদ করে তা জৈব সার ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। এতে তার জমিতে ফসলের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক গুন। তিনি জানান, আগের মতো জমিতে তার আর রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হচ্ছে না। এতে খরচও অনেক কম পড়ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনোজিৎ কুমার মল্লিক জানান, এ বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ধৈঞ্চার আবাদ হয়েছে। ফসলি জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার হ্রাস করতেই প্রতিনিয়ত কৃষকদের মাঝে পরিবশে ও কৃষিবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, ধৈঞ্চার আবাদ কৃষিবান্ধব একটি আবাদ যা কৃষকরা জমিতে পচিয়ে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করতে পারছেন। ধৈঞ্চা আবাদে কৃষকদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। আগামীতে ধৈঞ্চার আবাদ আরো বেশি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ