স্বাস্থ্য ডেস্ক:
প্রসব পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে অনেক মা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। অতিরিক্ত এ রক্তক্ষরণ রোধ করে লাখ লাখ মায়ের জীবন বাঁচাতে পারে সায়েবা’স মেথড। রোববার রাজধানীর মগবাজারে মামস ইনস্টিটিউট অব ফিস্টুলা অ্যান্ড ওমেন্স হেলথ সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, প্রসবকালীন রক্তপাত বন্ধে দেশের বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার ২০০০ সালে কনডম ব্যবহারের মাধ্যমে এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। যা সারা বিশ্বে ‘সায়বা’স মেথড’ নামে পরিচিত এবং ডা. সায়েবা আক্তার নামে নিবন্ধিত। পৃথিবীর অনেক দেশেই বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে লাখো মায়ের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার বলেন, প্রসব পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের সময় কনডমে স্যালাইন প্রবেশ করিয়ে ব্যবহার করা হলে অল্প সময়ের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, হাত-পা বা শরীরের কেটে যাওয়া কোনো অংশে চাপ দিয়ে ধরলে যেমন রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়, ঠিক তেমনি একই পদ্ধতিতে এ মেথড কাজ করে। আমাদের দেশে মাতৃমৃত্যুর ৩১ ভাগই হয় প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণে। তবে এ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে তা অনেকটাই কমে এসেছে। পদ্ধতিটি যেকোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা কমিউনিটি ক্লিনিকে সহজেই ব্যবহার করা যায় বলেও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, পদ্ধতিটি সস্তা ও শতভাগ কার্যকর। তাই ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়ায়, ভারত ও নেপালের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ডা. সায়বা আক্তারকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তারা জেনেছেন। এমনকি কেনিয়াতে এ সংক্রান্ত ভিডিও প্রচারের জন্য বাংলাদেশি একদল গাইনি বিশেষজ্ঞ দেশটিতে যান। পদ্ধতিটি কার্যকরভাবে বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারলে অনেক মা যেমন বেঁচে থাকার পথ খুঁজে পাবেন, তেমনি অনেক সন্তানও আঁতুড় ঘরেই মা হারানোর দুর্ভাগ্য থেকে রক্ষা পাবে। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ডা. সাকলায়েন রাসেল, গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. রাশিদা বেগম, ডা. ফাহমিদা জাবিন, ডা. রহিমা বেগম, ডা. নুসরাত সুলতানা প্রমুখ।
দৈনিকদেশজনতা/এন এইচ