২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৮:৩৬

ক্যান্সারের কোষ নিরাময়যোগ্য করতে সফল হয়েছেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক :

অর্ধশতক পেরিয়ে গেলেও ক্যান্সারের বিরুদ্ধে এখনও জয়ী হতে পারেনি মানুষ। বিজ্ঞানীরা নানা গবেষণা করেও ক্যান্সারের নিরাময় আবিষ্কারে শতভাগ সফল হতে পারেননি। তবে ভুল করে হলেও ক্যান্সারের কোষ নিরাময়যোগ্য করতে সফল হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন যে ক্যান্সার মূলত আমাদের জিনগত একটি রোগ। কখনও ভাইরাসের কারণে আবার কখনও রাসায়নিক বিকিরণসহ নানা কারণে ক্যান্সার হতে পারে। ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে জিনের মিউটেশন ঘটে। কোষ নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। কোষের আকার, আয়তন এবং আচরণে পরিবর্তন দেখা দেয়। এই কোষগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। সেই পুরনো কোষগুলোর জায়গায় নতুন কোষ এসে জায়গা করে নেয়। সাধারণভাবে কোষগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং নিয়মমতো বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়। সাধারণভাবে বলতে গেলে যখন এই কোষগুলো কোনো কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। একেই টিউমার বলে। এই টিউমার বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকেই ক্যান্সার বলে। তবে ক্যান্সার রোগের বিকাশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এই জিন নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েই বিজ্ঞানীরা ভুল করে এমন এক আবিষ্কার করে বসেন যা ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষকে সাধারণ কোষে রূপান্তর ঘটাতে পারে। বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করলেন ম্যাকরোফেজেস কোষের মধ্যে লিউকোমিয়া কোষ প্রবেশ করালে তা ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষকে নিষ্কিয় করতে সক্ষম। সেই কোষ ক্যান্সারের জন্য দায়ী পেটোজেন কোষকে খুঁজে বের করে খেয়ে ফেলে। ফলে কোনো মানবদেহে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ বেঁচে থাকতে পারে না। গবেষণাগারে ক্যান্সার কোষকে পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা আশ্চর্য ব্যাপারটি লক্ষ্য করেন। ডিএনএ’র নিয়ন্ত্রণ সহজতর করতে কোষের প্রোটিনের প্রয়োজন হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীরা দেখলেন এই নিয়ন্ত্রণ কর্মকাণ্ডের সময় ক্যান্সার আক্রান্ত কোষকে বিশেষ ম্যাকরোফেজেস কোষ স্বাভাবিক কোষে রূপান্তর ঘটিয়ে ফেলে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে ক্যান্সারের লাগাম টানা কার্যকরভাবে সম্ভব হবে। কোষের এই রূপান্তর প্রক্রিয়াকে বিজ্ঞানীরা differentiation therapy বা বিভেদ চিকিৎসা হিসেবে অভিহিত করেছেন। তারা আশা করছেন এই প্রক্রিয়ার মাধ্যম শরীরে বাধা ক্যান্সারের দূষিত কোষকে ভবিষ্যতে নির্মূল করা সম্ভব হবে। ১৯৫০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে বিজ্ঞানীরা ক্যান্সারে মৃত্যুর হার মাত্র ৫ ভাগ কমাতে সক্ষম হয়েছেন। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০১৫ সালে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৪৩০ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। ক্যান্সার চিকিৎসার ধাপগুলো এত সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য যে অনেক সময় আমাদের চিন্তায় পড়তে হয় কোনটা বেশি খারাপ, ক্যান্সার নাকি রোগ সনাক্তকরণের পরবর্তী চিকিৎসা পদ্ধতি? বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই প্রক্রিয়া কার্যকর হলে রোগ সনাক্ত এবং চিকিৎসা ব্যয় অনেকাংশে কমে যাবে।

দৈনিকদেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :আগস্ট ৩, ২০১৭ ১:১৯ অপরাহ্ণ