২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:১৯

বাচ্চাদের ভালো-মন্দ আদর সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিন

লাইফ স্টাইল ডেস্ক:

ভালোবেসে ছোট বাচ্চাদের দেহের বিভিন্ন অংশে আমরা সবাই আদর বা স্পর্শ করে থাকি। কিন্তু আমরা কি জানি আমাদের এ ধরনের কিছু ভালোবাসা আমাদের সন্তানদের অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে? আপনি আপনার সন্তানের শরীরে যে উদ্দেশে স্পর্শ করবেন, আপনার আশেপাশের লোকজনের সেই একই উদ্দেশ্য নাও থাকতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন এবং আপনার সন্তানকেও সতর্ক করুন। যেহেতু সন্তানদের ২৪ ঘণ্টা চোখে চোখে রাখা সম্ভব নয়, তাই ছেলেমেয়েকে গল্পের মাধ্যমে মন্দ আদর/স্পর্শের ভয়ঙ্কর দিকগুলো বুঝিয়ে বলুন। সে যেন নিজেকে রক্ষা করতে পারে।

ভালো এবং মন্দ আদর/স্পর্শ কী:
দেহের প্রতিটা স্পর্শের ভালো ও মন্দ দিক আছে। তাই আপনাকে আগে জানতে হবে ভালো স্পর্শ ও মন্দ স্পর্শ কী? যেমন আপনি আপনার বাচ্চাকে খালিগা করে গোসলের সময় সারা শরীরে হাত বোলালেন। অথবা বাচ্চা টয়লেট করার পর তার গায়ে হাত দিয়ে পরিষ্কার করে দিলেন অথবা খুশির খবর শুনে তাকে জড়িয়ে ধরলেন। এটা অবশ্যই ভালো স্পর্শ। কিন্তু বাচ্চার একই অংশগুলোতে যদি অন্য কেউ খারাপ উদ্দেশে হাত দেয় সেটা হচ্ছে মন্দ স্পর্শ।

ভালো স্পর্শ:
. হাত ধরা বা হ্যান্ডশেক করা।
. খুশি হয়ে হাগ করা (জড়িয়ে ধরা)।
. পিঠ চাপড়ে বাহবা জানানো।
. শুধুমাত্র কপালে চুমু খাওয়া।
. মাথায় বা চুলে চুমু খাওয়া।
. মাথার চুল নেড়েচেড়ে দেওয়া।
. শুধুমাত্র বাহুতে ধরা।

মন্দ স্পর্শ:
. ঠোটে, চোখে, গালে, নাকে, কানে, গলাতে ও থুতনিতে চুমু খাওয়া বা স্পর্শ করা।
. কাঁধে চাপ দেওয়া, স্পর্শ করা বা চুমু খাওয়া।
. হ্যান্ডশেক করার সময় সুড়সুড়ি দেওয়া।
. বিভিন্ন ছলাকলা করে বুকে হাত দেওয়া।
. নাভিতে বা তার আশেপাশে হাত দেওয়া। (অনেক সময় আমরা বাচ্চাদের নাভি বা পেটে মুখ লাগিয়ে সুড়সুড়ি দিয়ে হাসানোর চেষ্টা করি এটা করা উচিৎ নয়।)
. ছেলে বা মেয়ের যৌনাঙ্গে হাত দেওয়া।
. নিতম্বে হাত দেওয়া, চাপ দেওয়া, বা চাপড় দেওয়া।
. উরুতে হাত বোলানো বা চাপ দেওয়া।
. হাঁটু ধরে নাড়াচাড়া করা।
. হাত বা পায়ের আঙুল নিয়ে নাড়াচাড়া করা।
. গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের শরীরে যে যে অঙ্গগুলো যৌন উদ্দীপক বা উত্তেজক হিসেবে কাজ করে বাচ্চার শরীরে কিন্তু ওই অঙ্গগুলো একই কাজ করে।

সতর্ক করুন:
. এই বিষয়গুলো নিয়ে আপনার পরিবারের সবার সঙ্গে খোলা মনে আলোচনা করুন। বাচ্চার বাবা, মামা, চাচা, দাদা, খালা, ফুফু, যেই হোক তাদেরকে মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে সজাগ করুন। কারণ, তাদের ভালো মনের ভালোবাসা হয়ত আপনার সন্তানের ভবিষ্যতে বিপদ হয়ে দাঁড়াবে।

. আপনার সন্তানের বয়স অনুযায়ী বিভিন্ন গল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে বুঝিয়ে বলুন।
. ছেলেমেয়েরা যেন আপনার কাছে কোনো কিছু না লুকায় সেই অভ্যাস গড়ে তুলুন।
. তার স্কুল ও খেলার সঙ্গী ও আশেপাশে যাদের সঙ্গে মিশে বা যাদের বাড়িতে যায় তাদেরও এই বিষয়গুলো নিয়ে সতর্ক করুন।
. কাদের সঙ্গে মেলামেশা করে, কাদের সঙ্গে খেলতে যায় খেয়াল রাখুন।
. তার শরীর একান্তই তার— এটা সুন্দর করে বুঝিয়ে বলুন।
. বাচ্চারা কি ধরনের বই পড়ছে বা কি ধরনের মুভি দেখছে খেয়াল রাখুন।
. তার মন্দ স্পর্শের অঙ্গগুলোতে কেউ যদি হাত দেয় তাহলে কিভাবে নিষেধ করতে হবে বুঝিয়ে বলুন।
. বাচ্চারা যেন কোনো লোভ বা ভয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে সতর্ক করুন।
. যৌনাঙ্গ সম্পর্কে বাচ্চাদের কাছে সম্পূর্ণ না লুকিয়ে তার বয়স অনুযায়ী উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বলুন। যেন নির্দিষ্ট বয়স বা সময়ের আগে এর অপব্যবহার না করে। অপব্যবহার করলে ভবিষ্যতে তার কি কি ক্ষতি হতে পারে তার সম্পর্কে ধারণা দিন।

তথ্য ও ছবি : ইন্টারনেট

দৈনিকদেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :আগস্ট ১, ২০১৭ ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ