নিজস্ব প্রতিবেদক:
দীর্ঘ ৬৮ বছর ধরে ছিটমহল নামের কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার দুই বছর পূর্তি আজ। বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ার ছড়ার কালিরহাট বাজারে ও কামালপুরে সোমবার রাত ১২টা ১ মিনিটে ৬৮টি মোমবাতি জ্বালিয়ে দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে ১ আগস্ট(মঙ্গলবার) র্যালি, আলোচনা সভা, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দিনব্যাপী খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দাসিয়ারছড়াবাসী।একইভাবে এ কর্মসূচি পালন হওয়ার কথা রয়েছে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, এবং নীলফামারী জেলার অন্তর্গত ১১১টি বিলুপ্ত ছিটমহলে। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে বিলুপ্ত হয় দু’দেশের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২টি ছিটমহল। বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় ১১১টি ছিটমহলের ৪১ হাজার ৪৪৯ জন মানুষ বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে গণ্য হয়। তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে প্রথম স্মার্টকার্ড পাওয়াসহ সরকারের নানা উন্নয়নমূলক সুবিধাদি পায়। বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর জীবন-মান উন্নয়নে রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সরকারের নেওয়া নানা কর্মসূচির বাস্তবায়ন শুরু হয় বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তিটি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ অনুমোদন করলেও দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে ঝুলে রাখে ভারত। ২০১১ সালে ঢাকায় হাসিনা-মনমোহন প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। পরে ২০১৫ সালের ৫ মে ভারতীয় মন্ত্রী পরিষদে স্থল সীমান্ত বিলটির অনুমোদন দেওয়া হয়। ৬ মে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসভায় বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। ভারতের লোকসভায় বিলটির চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টি আলোর মুখ দেখে। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে এই দিনে ছিটমহল বিনিময়ের ফলে বাংলাদেশ পায় ১৭ হাজার ২৫৮ একর এবং ভারত পায় ৭ হাজার ১১০ একর জমি। ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশি বিলুপ্ত ৫১টি ছিটমহলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলায় ছিল ৪৭টি এবং জলপাইগুড়ি জেলায় ছিল ৪টি। এর লোকসংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ২১১ জন।
দৈনিকদেশজনতা/এন এইচ