নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, বাংলাদেশকে শোষণ করছে বর্তমান ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার। ইতিহাসে দেখা গেছে বিশ্বে অনেক স্বৈরশাসক রয়েছেন। তারাও বর্তমান বাংলাদেশের সরকারকে দেখে লজ্জা পেতেন।
রোববার বিকেলে তিনি রাজধানীর বাংলামটর এলাকার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) টাওয়ারে ধানমন্ডি থানা বিএনপি ও সকল অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে নতুন সদস্য পদ সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য সভা-সমাবেশ করতে পারি না। মিছিল করতে পারি না। আর এখন ইনডোর প্রোগ্রামও করতে পারছি না। একটি রাজনৈতিক দলের সব থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি পালনেও বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি। আমাদের সেই অনুষ্ঠানও করতে দেওয়া হচ্ছে না।’ এদিকে কর্মসূচি শুরুর আগে অনুষ্ঠানস্থলে এসে শাহবাগ থানা পুলিশ জানিয়ে দেয় ‘অনুমতি’ না থাকায় কর্মসূচি করতে দেওয়া হবেনা। এ সময় বহু সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে সতর্কবস্থায় থাকতে দেখা যায় অনুষ্ঠান ঘিরে । তবুও তড়িঘড়ি করেই কর্মসূচি শেষ হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শেখ রবিউল আলম রবির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এসময় ধানমন্ডি থানা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের দুই শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। শ্রমিক দল নেতা আবু কাওসার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, ‘অবৈধ সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসন ঘরোয়া পরিবেশে অনুষ্ঠানে বাঁধা দিচ্ছে। আমরা আগামী দিনে নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। জনগণের রায়ে নির্ধারিত হবে কারা দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকবেন? এজন্য আমরা দাবি করেছি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। কিন্তু দেশে নির্বাচনের পরিবেশ আছে কিনা তা সহজেই বুঝা যায়। আজকে সরাসরি গুলিবর্ষণ করা হয় কোনো প্রোগাম বা মিছিল করতে গেলে। আমরা নিজেদের দাবিতে কোনো মিছিলও করতে পারিনা। বাংলাদেশের নিপীড়ন দেখলে বিশ্বের বহু স্বৈরশাসকও লজ্জা পাবে।’ তিনি বলেন, ‘দেশের ৯৬ ভাগ মানুষ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে শেখ হাসিনাকে সরকারে রেখে কখনো কোনোদিন হবেনা নিরপেক্ষ নির্বাচন। অবিলম্বে রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আর ছেলে ভোলানো কথা বলে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবেনা।’
তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রতারক, তার সরকার প্রতারণা করে। কিন্তু বিএনপি দেশ ও মানুষের জন্য লড়াই করে। বিএনপি দেশের অস্তিত্বের সাথে একাকার। এজন্যই বিএনপির জনপ্রিয়তা সারাদেশের তৃণমূলে । বিএনপির নেতাকর্মী আছেন দেশের সর্বত্রই। অনেকেই বলেছিলেন জিয়ার মৃত্যুর পর বিএনপি ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। সারাদেশে বিএনপি আরো শক্তিশালী হয়েছে। বিএনপিকে তৃণমূল নেতাকর্মীরা বাঁচিয়ে রেখেছে। বিএনপিকে স্তব্ধ করা যাবেনা। যেমন ওয়ান ইলেভেনে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে গ্রেফতার করেও তা সম্ভব হয়নি।’
সভাপতির বক্তব্যে শেখ রবিউল আলম রবি বলেন, ‘দেশে রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে। ঘরোয়াভাবে সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমও করতে পারছিনা। আমাদের সবাইকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের মুক্তির আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। কারণ বিএনপি জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বিএনপির এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যে কাজ করছি। ধানমন্ডি থানায় ১০ হাজার নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন করতে চাই। ঢাকা মহানগরীতে ধানমন্ডিতে সবচেয়ে বেশি সদস্য সংগ্রহ করবে। ইনশাল্লাহ আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবো।’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি