২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১১:৩১

রাজধানীতে ৫০ টাকার নিচে সবজি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজধানীতে কয়েক দিনের ব্যবধানে সবজির বাজারে টালমাতাল অবস্থা বিরাজ করছে। এ ছাড়া সরকারিভাবে প্রায় ৪৭ হাজার টন চাল আমদানি সত্ত্বেও ফের বেড়েছে মোটা চালের দাম। লাগমহীনভাবে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। বিক্রিতারা বলছেন, সরকারের আমদানি করা চালের দাম বেশি হওয়ায় বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। একই সঙ্গে টাকা বৃষ্টিতে সবজির আবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাড়ছে অত্যাবশ্যকীয় এ খাদ্য পণ্যের দামও।

শনিবার রাজধানীর রামপুরা ও মেরাদিয়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, মোটা চালের দাম মাঝে কিছুটা কমলেও আবার বাড়তে শুরু করেছে। বিভিন্ন জাতের মোটা চাল কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে প্রতি কেজি বিআর ২৮ চালের দাম প্রকার ভেদে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, পাইজাম ৪৮ টাকা, চায়না ইরি ৪৫ থেকে ৫৬ টাকা, পারিজা ৪৬ টাকা, স্বর্ণা ৪৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ হিসাবে প্রতি কেজি মোটা চালে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা।

এ ছাড়া বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা,   নাজিরশাইল ৬০ টাকা, বাসমতি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, কাটারিভোগ ৭৫ টাকা, হাস্কি নাজির চাল ৫৫৮ টাকা এবং পোলাও চাল খোলা ৯০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারের চাল ব্যবসায়ী মোসলেন উদ্দিন বলেন, ‘সরকার বেশি দামে ভিয়েতনাম থেকে চাল আমদানি করছে। ভারত থেকে আমদানি করা চালের দামও বেশি পড়ছে। এ কারণে চাল আমদানির কোনো প্রভাব বাজারে পড়ছে না।’ সরকার সম্প্রতি দুই ধাপে ভিয়েতনাম থেকে ২০ হাজার ও ২৭ হাজার টন চাল আমদানি করে। এরপর সরকারিভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়, চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।

এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুনের দাম প্রায় ৩০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, শিমের কেজি ১২০ টাকা, টমেটো মানভেদে ১০০ থেকে ১৬০ টাকা, শশা ৫০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা, কচুর লতি ৬৫ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ৫৫ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি আকার ভেদে ৪ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক আঁটি প্রতি ২০ টাকা, লালশাক ২০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছ ও মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ থেকে ৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ও শিং ৬০০-৮০০ টাকা, আকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশ ৮০০-১০০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা এবং পাকিস্তানি লাল মুরগি ২০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা, গুরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

কাঁচা বাজার করতে আসা গার্মেন্টস শ্রমিক মো. নোমান বলেন, ‘সব কিছুর দাম বেশি। কি কিনবো। বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাইতেছি না। আমরা কম আয়ের মানুষ। এত দাম দিয়ে সবজি কেনার ক্ষমতা আমাদের নেই।’

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :জুলাই ২৯, ২০১৭ ১২:৫২ অপরাহ্ণ