আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেটের এক সদস্য ফেসবুক লাইভে এসে এক ফিলিস্তিনি পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। ইসরাইলি এমপি ওরেন হাযান হিব্রু ভাষায় বলেন, ‘আমি ফিলিস্তিনি হামলাকারী ওমর আল আবেদ এবং তার পরিবারকে হত্যা করব।’ আল-আকসা নিয়ে পশ্চিমতীরে ইসরাইলি সেনারা গুলি করে তিন ফিলিস্তিন যুবককে হত্যা করে। পরে ফিলিস্তিনিদের পাল্টা হামলায় তিন ইসরাইলি নিহত হয়। ইসরাইলি সেনারা আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছিল। ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে খুলে দিতে বাধ্য হয়। তবে মসজিদের গেইটে মেটাল ডিটেক্টর বসায়। নতুন করে জেগে ওঠা এই সংকটে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয় এবং আহত হয় বয়েকশ’। অধিকৃত পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বসতিতে পাল্টা হামলা চালায় ফিলিস্তিনিরা, যাতে তিন ইসরাইলি নিহত হয়। চলমান এ সংকট নিয়ে ইসরাইলি নেসেট সদস্যের ফেসবুক লাইভে সরাসরি হত্যার ঘোষণা তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। ফিলিস্তিনের তথ্যমন্ত্রী মোস্তফা বারগোতি বলেন, ‘হাযানের মন্তব্য দেখিয়ে দিচ্ছে বর্ণবাদ কত গভীরে প্রোথিত এবং ইসরাইল কিভাবে এই বর্ণবাদ প্রক্রিয়া ও দখলদারিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।’ তিনি বলেন, ‘এটা খুবই বিপজ্জনক। অথচ এ ধরনের মন্তব্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ অংশ এড়িয়ে যায়।’ ভিডিওতে নেসেট সদস্য হাযানকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি সোজা কথায় যদি বলতে চাই তাহলে বলতে হয়, আমি যদি গতকাল সেই সন্ত্রাসীর বাড়িতে যেতাম, তাহলে তাকে ও তার পরিবারকে ধরতাম এবং সবগুলোকে একসঙ্গে ফাঁসি দিতাম।’ তিনি আরো বলেন, ‘আবেদের জন্য ফাঁসি আসলে খুবই ছোট্ট শাস্তি।’ উল্লেখ্য, আবেদ নামের ২০ বছর বয়সী এক তরুণ গত সপ্তাহে ইহুদি বসতি হালামিশের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে যায় এবং তিনজন ইসরাইলিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। পূর্ব জেরুসালেমে আল-আকসা মসজিদ নিয়ে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে এই পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে বর্তমানে আহত অবস্থায় চিকিৎসা চলছে তরুণ আবেদের। ইসরাইলি একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে তার চিকিৎসা চলছে। এটা নিয়ে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির এই সদস্য বলেন, ‘তাকে (আবেদ) মরতে দাও। রক্ত ক্ষয়ে ক্ষয়ে সে মরুক। তাদের বাঁচার কোনো অধিকার নেই। তাদের অস্তিত্ব নিয়ে থাকারও কোনো অধিকার নেই এবং আমি আশা করি সবাই আমার সঙ্গে এ বিষয়ে একমত।’ এদিকে মঙ্গলবার সেই ফিলিস্তিনি যুবকের মাকে গ্রেফতার করেছে ইসরাইলি সেনারা। কারণ অনলাইনে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মা ইবতিসাম আল আবেদ বলছেন, তিনি তার ছেলের কাজে গর্বিত।
দৈনিকদেশজনতা/এন এইচ