নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকার আবারো ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যাওয়ার চক্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকারের এজেন্সিগুলো বিএনপির সিনিয়র নেতাদের উদ্ধৃত করে নানা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এবার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও অবিশ্বাস্য কল্পকাহিনী প্রচার করা হচ্ছে। মূলত বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাবার পর সরকারের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তাদের জনপ্রিয়তা শুণ্যে চলে আসায় এখন দেশবাসী ও বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টির জন্য সরকারী এজেন্সিগুলোকে মাঠে নামিয়ে দেয়া হয়েছে।
নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নামে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বিবৃতি একটি ওয়েবসাইটে প্রচার করা হয়েছে। দু’দিন আগেও তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে ভাইস চেয়ারম্যান এম মুর্শেদ খানের নাম ব্যবহারের মাধ্যমে বানোয়াট, অসত্য, মনগড়া বক্তব্য একটি ওয়েবসাইটে প্রচার করা হয়েছে। যার সাথে মুর্শেদ খানের কোনো সম্পর্কই নেই। তারা বিএনপি নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। ১/১১এর সরকারওতো কত অপচেষ্টা করেছিল কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আপনারাও পারবেন না।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা কতই না প্রলাপ বকছেন। তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেছেন। অথচ প্রথমে আওয়ামী লীগের নেতারা বললেন-বেগম খালেদা জিয়া মামলার ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন, এখন তারা বলছেন-বেগম জিয়া ষড়যন্ত্র করতেই লন্ডন গেছেন। এরপর হয়তো তারা আবার আরেক নতুন তত্ত্ব দিবেন।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন জোটের মন্ত্রী ও নেতারা মুনাফা, নগদ লাভ ইত্যাদির জন্যই প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতেই লন্ডনে দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতেই ষড়যন্ত্রতত্ত্বে মেতেছেন। দেশে তাদের সৃষ্ট দারিদ্র, অবিচার, নিষ্ঠুর নিপীড়ণ আর গুম, খুন ও লাশ ফেলার রাজনীতি ঢেকে ফেলার জন্যই এরা লন্ডনে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
রিজভী বলেন, মামলার ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এই আওয়াজ তুলে আওয়ামী নেতৃবৃন্দ নিজেরাই এক্সপোজ হয়ে গেছেন। বিপদের মূহুর্তে পলাতক কারা। কারা বারবার জনগণের সাথে বেঈমানী করেছে, সেটি জনগণ খুব ভাল করে জানে। গায়ের জোরে ইতিহাস লেখানো হলেও মানুষের অন্তরে সত্য ইতিহাস উদ্ভাসিত। আর আওয়ামী লীগের একটি স্বকীয় পরিমার্গ হচ্ছে-চক্রান্ত। আওয়ামী লীগের কর্মকান্ডের মাধ্যমেই এদেশের মানুষ চক্রান্ত শব্দটির সাথে পরিচিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এরাই প্রথম বহুদলীয় গণতন্ত্রকে নির্মমভাবে দড়িতে লটকিয়ে ১ নম্বর বাকশাল কায়েম করে বাক-ব্যক্তি ও সংবাদত্রের স্বাধীনতাসহ নাগরিক স্বাধীনতাকে সমাধিস্থ করে। এরা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে না যাবার অঙ্গীকার করে এরশাদের সাথে মিলে চক্রান্তের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সেই নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষনা দিয়ে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। এরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য রক্তক্ষয়ী তান্ডব চালিয়ে আবারো চক্রান্তের মাধ্যমে সেটিকে বাতিল করে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করে জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। সংবিধান ও গণতন্ত্রকে পাথরচাপা দিতে যারা ভূমিকা রেখেছিল সেই মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন এর সরকারকে তাদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে উল্লেখ করে তাদের সাথে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ২ নম্বর বাকশাল কায়েম করে। ’৭১ এবং এর পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে পলায়ন ও আত্মসমর্পণের ইতিহাস শুধুই আওয়ামী লীগের। বর্তমান শাসকদল নির্দয়কর্তৃত্ত্ববাদী, কুৎসারটনাকারী, মিথ্যুক।
রিজভী আরো বলেন, আমি আওয়ামী নেতাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-বিএনপি নয়, ষড়যন্ত্র করছেন আপনারা। তার উপর আপনাদের সাথে আছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাহেব। সুতরাং ষড়যন্ত্রের ব্যাপকতা কত ভয়াবহ হতে পারে তা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করছে।
আর সেই কারনে সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিগুলোকে মাঠে নামিয়ে মিথ্যা কল্পকাহিনী রচনা করে বিএনপি’র সিনিয়র নেতাদের নামে বদনাম ও কুৎসা রটানোর অপচেষ্টা করছে। এসব ষড়যন্ত্রমূলক রটনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ৫ জানুয়ারীর মতো একতরফা নির্বাচন করা। তাতে কোনো লাভ হবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই আগামী সাধারণ নির্বাচন হবে।
তিন বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ইস্পাতকঠিন মনোবলে ঐক্যবদ্ধ। কাজেই চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র-নীল নকশা করে আর পার পাওয়া যাবেনা। চারিদিকে আপনাদের বিদায়ের সুর ধ্বণিত হচ্ছে। পরিবর্তনের বাতাস বইছে সর্বত্র। এটি ঠেকানো যাবে না। জুলূম-নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কোন স্বৈরাচার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, পারবেনা।
দৈনিকদেশজনতা/এন এইচ