২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:২৭

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ৮ খাদ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেহযন্ত্র অগ্ন্যাশয় যদি যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তাহলে যে রোগ হয় তা হলো ডায়াবেটিস। দিনকে দিন ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডায়াবেটিস রোগটি কখনো পুরোপুরি ভালো হয়ে যাবে না। তবে ঠিকমতো নিয়মকানুন ও নির্দেশ মেনে চললে এটা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

যেমন খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা, নিয়মিত কায়িক পরিশম বা ব্যায়াম করা, প্রয়োজনীয় ঔষধ সেবন এবং পর্যাপ্ত জ্ঞান ও শৃঙ্খলা বোধসহ বিভিন্ন ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আসুন জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বা আশঙ্কা এড়াতে ঘরোয়া উপায়সমূহ;

করলার রস

তিতকুটে খাবার কেউই খুব একটা পছন্দ করেন না। কিন্তু ঔষধ সেবনের চাইতে কি কোনো ফল বা সবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধ করাই কি উত্তম নয়? খালি পেটে তিতা করলার তৈরি শরবত খেলে তা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে- একথা চিকিৎসাবিজ্ঞানেও প্রমাণিত। কেউ যদি একান্তই শরবতটি খেতে না চান, তাহলে তারা করলা খানিকটা আধা-ভাজা করে কিংবা স্টাফড করলাও খেতে পারেন। করলা দিয়ে চিপস তৈরি করে তা নিয়মিত নাশতায় যোগ করাও একটি ভালো উপায়। এই খাদ্যাভ্যাস যে কেবল আপনার খাদ্যতালিকাতেই পরিবর্তন আনবে, তা নয়, আপনার স্বাদেও পরিবর্তন আনবে এবং তা হবে স্বাস্থ্যকর।

মেথি

মেথির কয়েকটি দানা নিয়ে রাতভর পানিতে ভিজিয়ে রাখতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত পরিষ্কারের পর প্রথম কাজটি যা করতে হবে, তা হলো- ভেজানো মেথির দানাগুলো পানিসহ গিলে ফেলা। চাইলে চিবিয়েও খেতে পারেন।

জাম

ডায়াবেটিসের কারণে অগ্ন্যাশয়ে যে প্রভাব পড়ে, তা এড়াতে একটি কার্যকর প্রাকৃতিক ঔষধ হলো জাম ফল। শুধু ফলটিই নয়, এর বিচি শুকিয়ে, গুঁড়ো করে দিনে দু’বার পানি দিয়ে খেলে তাও দারুণ কার্যকরি ঔষধি ফল দেয়।

পেয়ারা

পেয়ারা এমন একটি ফল, যা সারা বছরই কমবেশি পাওয়া যায়। উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘সি’ এবং আঁশে ভরপুর পেয়ারা সম্ভবত একমাত্র ফল, যা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নির্ভয়ে খেতে পারেন ইচ্ছেমতো।

অবশ্য সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, পেয়ারার খোসায় থাকা খাদ্য উপাদান রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই প্রয়োজন মনে করলে, পেয়ারার খোসা ছিলে ভেতরের ফলটিই কেবল খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করুন।

আমলকি

আমলকির শরবতও রক্তে শর্করা ও চিনির পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে। যদি সম্ভব হয়, তাহলে প্রতিদিনের চা বা কফিতে চিনি বাদ দিন এবং এর পরিবর্তে বিকল্প হিসেবে মধু ব্যবহার করতে পারেন।

দারুচিনি

চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় প্রমাণিত যে, দারুচিনি রক্তের শর্করা এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করে।

আম পাতা

কচি আম পাতায় ট্যানিনস নামক অ্যান্থোসায়ানিডিন থাকে, যা ডায়াবেটিসের প্রাথমিক পর্যায়ের রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ও হাইপারগ্লাইসেমিয়া কমাতে সাহায্য করে এই আম পাতা। তাই নিয়মিত এটি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

কচি আম পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে রাখতে পারেন। আবার গরম পানিতে সেদ্ধ করে চায়ের মতো পান করতে পারেন অথবা তাজা পাতা পানিতে ভিজিয়ে সারা রাত রেখে দিয়ে সকালে এ পানি ছেঁকে নিয়ে এ পানি পান করতে পারেন।

নিম পাতা

নিম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চমৎকারভাবে কাজ করে। নিমের পাতা রক্তের সুগার লেভেল কমতে সাহায্য করে। এছাড়া রক্ত নালীকে প্রসারিত করে রক্ত সংবহন উন্নত করে। ভালো ফল পেতে নিমের কচি পাতার রস প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন। সকালে খালি পেটে ৫টি গোলমরিচ ও ১০টি নিম পাতা বেটে খেলে তা ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে।

পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের সঙ্গে কথা বলুন, ডায়াবেটিস নিয়ে আলোচনা করুন। নিশ্চিতভাবে এরকম আরো অসংখ্য ঘরোয়া পথ্য পাবেন, যেগুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে কার্যকর!

এছাড়া নিয়মিত হাঁটা এবং শারীরিক ব্যায়াম প্রতিদিনের কাজের তালিকায় যোগ করুন। সুস্থ থাকুন।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :জুলাই ২২, ২০১৭ ৩:৪১ অপরাহ্ণ