২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:৫২

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে গাইবান্ধার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সদর উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের ৭০ হাজার ৯২৯টি পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদী বেষ্টিত অন্তত ৭০ চরে ডাকাতের উপদ্রপ বেড়েছে। এসব চরের বাড়িঘরে হাটু থেকে কোমর পানি হওয়ায় অধিকাংশ পরিবার ডাকাতির ভয়ে গবাদি পশু ও সহায় সম্বল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য উচু স্থান ও ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ও আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে চলে গেছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা কবলিত ৪ উপজেলায় ৮২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরমধ্যে ১৭ আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যা কবলিত মানুষ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। ফুলছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর মন্ডল জানান, ফুলছড়ি জুনিয়র হাইস্কুলে আশ্রয় নেয়া বানবাসিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া বালাসিঘাট, সিংড়িয়া, রতনপুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রিত মানুষ গুলো জানান, তারা তিন দিন হলো সেখানে এসেছেন। কোনো সরকারি বা বে-সরকারি সংস্থার কাছ থেকে এখন পর্যন্ত তারা কোনো ত্রাণ পায়নি। অন্যদিকে যে সব পরিবার এখনও উচু স্থান ও ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ও আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে পারেনি তারা ঘরে মাচা করে ও চৌকির উপর কষ্টে দিন যাপন করছেন। তাদের খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। রান্না করে খাবার মতো পরিস্থিতি না থাকায় তারা অর্ধাহার অনাহারে দিন যাপন করছে। উড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহাতাব উদ্দিন জানান, বন্যা ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত দেড় হাজার পরিবারের তালিকা প্রশাসনের কাছে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ২০০ পরিবারের ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে তিনি জানান। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ১২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে আরও বলা হয়েছে, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত ২২৫ মে.টন চাল ও ১৫ লাখ টাকা দুর্গত মানুষদের মধ্যে বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ৯০ মে. টন চাল ও ৬ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীর ভাঙনে ১৩০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। ভাঙনের সম্মুখিন হয়ে পড়েছে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এদিকে পানির তোড়ে সদর উপজেলার কামারজানি বন্দরের ভাঙন শুরু হয়েছে। এছাড়া শ্রীপুর ও কামারজানির সীমান্তে সরাইল রেগুলেটরটি ভাঙনের মুখে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড রেগুলেটরটি রক্ষায় ভাঙন এলাকায় বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ব্রহ্মপুত্রের তীরে নিক্ষেপ করছে।

দৈনিক দেশজনতা/ আই সি

 

প্রকাশ :জুলাই ১৩, ২০১৭ ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ