আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
আসাম, অরুণাচল প্রদেশ আর পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলে আগামী কয়েকদিনে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ওই এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া কয়েকটি নদী অববাহিকায় নজিরবিহীন বন্যা হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে আসাম, অরুণাচল, সিকিম, ভুটান আর উত্তরবঙ্গের কয়েকটি অঞ্চলে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বর্ষার ফলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এর ফলে আগামী ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র, ও তার শাখা ও উপ-নদীগুলোর পানির স্তর দ্রুত বাড়ছে। আসামের জোরহাট, ডিব্র“গড় আর শোনিতপুরে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় মাঝারি থেকে শুরু করে বড়সড় বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার মোরিগাঁও, কামরূপ, গোয়ালপাড়া এবং ধুবড়ি জেলাগুলিতে ব্যাপক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে ১৩ জুলাই পর্যন্ত। রাঙ্গানদী আর জিয়া ভরালী নদীগুলোতে পানি এতটাই বেড়ে যেতে পারে, যার ফলে উত্তর লখিমপুর শোনিতপুরে নজিরবিহীন বন্যা হতে পারে। এছাড়াও শিবসাগর, বরপেটা, কোকরাঝাড়, চিরাং এবং বঙ্গাইগাঁও জেলাগুলোতে একই সময়ে মাঝারি মাপের বন্যা হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলীয় আলিপুরদুয়ার জেলায় সঙ্কোশ নদীর পানিরস্তর বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে গেছে। তোর্ষা নদীর পানি স্তরও বাড়ছে। সিকিম থেকে আসা অন্যান্য নদীর পানিও বাড়ছে দ্রুত। গত কয়েকদিন ধরেই আসামের বিভিন্ন নদী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি চলছে। ব্রহ্মপুত্র, সিয়াং, সুবনসিরি, ধানসিঁড়ি, বেকি, বরাক এবং কুশিয়ারা নদীগুলোর পানির স্তর বেড়ে যাওয়ায় ওই রাজ্যের ২০টি জেলার প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন। এমাসের গোড়া থেকে বন্যায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে আসাম বিপর্যয় মোকাবেলা দফতর। তাদের দেয়া হিসাব অনুযায়ী ৭১টি ত্রাণ শিবিরে প্রায় ১৮ হাজার মানুষকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৭৭টি শিবির থেকে ত্রাণ বন্টন চলছে। বহু জায়গায় নদী বাঁধ, সড়ক আর সেতু ভেঙ্গে গেছে। দূরবর্তী এলাকাগুলো থেকে নৌকায় করে গতকাল প্রায় দেড় হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। উত্তরপূর্ব ভারতের চলতি এই বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেই আবারো নতুন করে ভয়াবহ বন্যার সতর্কতা জারি করা হল।
দৈনিকদেশজনতা/ই সি