নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের কালীগঞ্জ উপজেলার খয়েরতলা বাকুলিয়ায় পাঁচ কোটি ব্যয়ে নির্মিত রাস্তা ৩ সপ্তায় নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যস্ততম এই সড়কের কোল্ডস্টোর এলাকায় রাস্তার দুই পাশ ডেবে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করছে। প্রিয়োডিক মেইনটেনেন্স প্রজেক্টের (পিএমপি মেজর) আওতায় ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ কাজটি বাস্তবায়ন করছে। এ নিয়ে পথচারী ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।
ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রিয়োডিক মেইনটেনেন্স প্রজেক্টের (পিএমপি মেজর) আতওতায় ঝিনাইদহ যশোর সড়কের চারটি স্থানে টেন্ডার পেয়ে কাজ করেন ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম। কিন্তু সিডিউল মোতাবেক সঠিক ও যথাযথভাবে কাজ না করায় মাত্র ২০ দিনেই কালীগঞ্জ উপজেলার খয়েরতলা বাকুলিয়া অংশটি ডেবে গেছে। এ নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেছে। ৫ কোটিরও বেশি টাকার এ সব কাজ নিম্নমানের হওয়ায় সমালেচনার মুখে পড়েছে সড়ক বিভাগ।
এদিকে ঝিনাইদহ শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে সওজের আরেকটি রাস্তা অল্প দিনেই পিচ ও পাথর উঠে গেছে। ওই রাস্তায় ১২ মিলি খোয়া দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। হরিণাকুন্ডুর আমতলা তেলটুপি রাস্তায় যেনতেন ভাবে কাজ করে দুই কোটি ৩২ লাখ টাকা জুনের আগেই তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই সড়কের বিভিন্ন অংশে লেনথ ও খোয়ার থিকনেস কম দেওয়া হয়। কাজটি করেন বাগেরহাটের ঠিকাদার মোজাফফর।
সূত্র বলছে, যেনতেন ভাবে কাজ করে সড়ক বিভাগের টাকা এভাবে লুটপাটের ফলে ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলীকে হেড অফিস থেকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি তার জবাবও দাখিল করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, সওজের এসও মনিরুল ও ওয়ার্ক অ্যাসিসটেন্ট আতিয়ার রহমানের কালীগঞ্জের কাজটি দেখভাল করেছেন। কিন্তু তারা ঠিকাদারের সাথে যোগসাজস করে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা হরিলুট করেছেন এমন কথা সাধারণ মানুরে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। কালীগঞ্জ পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাকুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা চুন্নু মিয়া নিম্নমানের কাজে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি পুনরায় যথাযথভাবে করার দাবি জানিয়ে বলেন, এ ভাবে সরকারি টাকা শ্রদ্ধ করার কোনও যৌক্তিকতা নেই।তিনি দাবি করেন, মাত্র ১৫/২০ দিন আগে রাস্তাটি করা হয়। এখনো রোলারসহ সরঞ্জাম সাইটে পড়ে আছে।
একই ভাবে ক্ষোভের কথা জানান, কালীগঞ্জের বাকুলিয়া গ্রামের আজিজুল ইসলাম ও মহিউদ্দীন।
তাদের ভাষ্য, কাজটি সঠিক ভাবে করা হলে মাত্র ১৫/২০ দিনে নষ্ট হওয়ার কথা নয়। কাজের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম বলেন, আমি চারটি পয়েন্টে কাজ করেছি। কোনও স্থানে কাজ খারাপ হয়নি। কিন্তু কালীগঞ্জের খয়েরতলা বাকুলিয়া অংশে রাস্তার মূল বেইজ খারাপ হওয়ার কারণে বর্ষার পানি পেয়ে নষ্ট হয়েছে। আমার পাথর দিয়ে ম্যাগাডামের পর কার্পেটিং করার কথা সেটি আমি করেছি। কাজে কোনও ত্রুটি ছিল না।তিনি নষ্ট হওয়া অংশটি নিজ উদ্যোগে মেরামত করবেন বলেও জানান। বিষয়টি নিয়ে নিাইদহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান বলেন, কাজটি এখনো শেষ হয়নি, চলমান রয়েছে। কিন্তু শেষ করা রাস্তা কেন এমন হলো আমি তদন্ত করে দেখছি।
তিনি বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে এমন হতে পারে। তিনি অনিয়ম দুর্নীতির কথা অস্বীকার করেন। সড়ক বিভাগের যশোর অফিসের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (এএসই) সুরুজ মিয়া জানান, রাস্তা যেভাবে করার কথা সে ভাবেই তো হয়েছে। কেন এমন হলো তা তদন্ত করে দেখা হবে।তিনি বলেন, এই রাস্তা পিএমপি মাইনর প্রজেক্টের কাজ। আমি যতদূর জানি এটা রিপিয়ার সিলকোটের কাজ ছিল।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ