নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৭ এর কতিপয় বিষয়ের ওপর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর উক্ত নীতিমালা বাস্তবায়নের সাময়িক দায়িত্ব প্রদান না করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর জাতীয় সম্প্রচার কমিশন গঠনের আহ্বান জানায় টিআইবি।
বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা, ২০১৭ এর খসড়া প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের কাছ থেকে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক একাধিকবার মতামত সংগ্রহের উদ্যোগকে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে মনে করে টিআইবি। অন্যদিকে নীতিমালাটি অধিকতর যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজন যে সুনির্দিষ্ট মতামত ও সুপারিশমালা প্রদান করেছে তা সঠিক ভাবে প্রতিফলিত না হওয়ায় অনলাইন গণমাধ্যমসহ অন্যান্য গণমাধ্যমসমূহের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ক্ষেত্রবিশেষে বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।”
নীতিমালায় অনলাইন গণমাধ্যমকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয় উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, “বাংলাদেশে নিবন্ধিত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে অনলাইন গণমাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা এবং এর মাধ্যমে এসব সংস্থাকে গণমাধ্যম নীতিমালার আওতাভুক্ত করা অযৌক্তিক, তাই অনলাইন গণমাধ্যমের সংজ্ঞায়ন আরো স্পষ্টতর হওয়া বাঞ্ছনীয়।”
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক মনে করেন, নীতিমালা অনুযায়ী অনলাইন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকীয় নীতিমালা প্রস্তাবিত কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত করার যে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে, তা গণমাধ্যমের স্বাধীন মত প্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়া, এই নীতিমালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর ৫৭ (১) উপধারা এবং (৮০) ও (৮৬) ধারা এবং জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, ২০১৪ এর ৫ (১.৩), ৫ (১.৫) ও ৫ (১.৯) বিতর্কিত ধারাসমূহ অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় অনলাইন গণমাধ্যমসহ অন্যান্য গণমাধ্যমকেও মেনে চলতে হবে, যা গণমাধ্যমের সুষ্ঠু বিকাশের প্রধান অন্তরায় ও সংবিধান স্বীকৃত চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা পরিপন্থী।
এছাড়া, তথ্য মন্ত্রণালয়কে এই নীতিমালা বাস্তবায়নের সাময়িক দায়িত্ব প্রদান না করে অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট খাতে যোগ্যতাসম্পন্ন, গ্রহণযোগ্য ও দল-নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠন এবং কমিশন যেন ভয়-ভীতি ও পক্ষপাতহীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় টিআইবি। একইসাথে, কমিশন না হওয়া পর্যন্ত গণমাধ্যমের অধিকতর স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম নীতিমালাসমূহের বাস্তবায়ন স্থগিত রাখারও জোর দাবি জানিয়েছে টিআইবি।
দৈনিক দেশজনতা /এমএম