অনলাইন ডেস্ক:
সারা বিশ্বে মুসলমানদের জন্য পবিত্র রমজান মাস অতি সম্প্রতি শেষ হয়ে গেছে। অনেকের জন্যই এটা ছিল প্রথমবারের মতো সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযা রাখার অভিজ্ঞতা।
তেমনই এক নারী বেইলি ইকোলস (২২)। প্রথমবারের মতো রোজা রাখার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডের বাসিন্দা ইকোলস বলেছেন, ‘এটি ছিল একটি উত্তেজনাকর ও কঠিন যাত্রা, তবে খুবই পরিতৃপ্তির।’
বেইলি ইকোলস একটি ক্যাথলিক বাড়িতে বেড়ে উঠেন। ২০১৬ সালের নভেম্বরে তিনি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। ধর্মান্তরের পর প্রথমবারের মতো তিনি সদ্য গত হওয়া রমজান মাসের রোযা রাখেন।
চলতি বছরের প্রথম দিকে তিনি ফেসবুকে ঘোষণা দেন যে, তিনি ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। তার এই ঘোষণায় সামাজিক মিডিয়া জুড়ে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
তিনি ফেসবুকে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত তুলে দিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ছিল প্রকৃতপক্ষে আমার প্রভুর কাছাকাছি এবং তার অনুকূল সাড়া এবং তার সেই দয়া আমার ওপর পড়েছে।’
ইসলামে ধর্মান্তর ইকোলসের জন্য একটি নতুন যাত্রা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই যাত্রার সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রথমবারের মতো রমজানের রোজা রাখা ও হিজাব পরার অভিজ্ঞতা। তার এসবে যদিও অনেকে কিছু নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তাদের কেউ কেউ আমার প্রতি নেতিবাচক ছিল। তারা প্রশ্ন করত, ‘কেন আমি হিজাব পরি? এর উদ্দেশ্য কি?’ এটা ঠিক সবাই এটা পরিধান করছে না। কিন্তু কেবল একজন ব্যক্তি হিসাবে হিজাব আরো বেশি সংযুক্ত বলে আমি মনে করি।’
ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন কর্তৃক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালে দেশটিতে ধর্মীয় পক্ষপাতের দ্বারা অনুপ্রাণিত মোট ঘৃণা অপরাধের মধ্য এন্টি-ইসলামিক ঘৃণ্য অপরাধ বেড়েছে ২২ শতাংশেরও বেশি।
ইসলামবিরোধী ঘৃণ্য অপরাধ বেড়ে যাওয়া এবং নেতিবাচক মন্তব্য সত্ত্বে ইকোলস বলেন, ধর্মের জন্য তার ভালবাসা ইসলামভীতির ভয় অতিক্রম করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি বলব, দিনের শেষে আমি এটি কেবল আল্লাহর জন্য করছি। অন্য কারো জন্য নয়।’
ওই এলাকায় ইকোলসের মতো আরো এক ধর্মান্তরিত নারী আইভানা জাজোভস্কা।
আইভানা জাজোভস্কা বর্তমানে আন্টন এলাকায় ‘মদিনা প্রকল্প’ পরিচালনা করছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণ মুসলিমদের জন্য সংযোগ স্থাপন এবং আন্তঃধর্মীয় সম্প্রদায়কে একত্রিত করার কাজ করে থাকে।
নিজস্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতার অবসান ঘটানো এবং বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সুস্পষ্ট কথোপকথনের বিষয়টিকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রায় ১৩ বছর ধরে আমরা এই কাজটি করে যাচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের সময় নয়। তবে, পরিস্থিতি উত্তরণে আমাদেরকে আমাদের প্রতিবেশির কাছে যেতে হবে, আমাদের সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছাতে হবে।’
সূত্র: ডব্লিউকেওয়াসি ডটকম
দৈনিক দেশজনতা /এমএম