আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রায় দেড় যুগের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছল জিএসটি। ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা ছুঁতেই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর হাতে বোতাম টেপার মাধ্যমে পণ্য-পরিষেবা কর চালু হয়ে গেল সারা দেশে। সাক্ষী থাকল সংসদের ঐতিহাসিক সেন্ট্রাল হল। ১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্যরাতে যেখানে কিংবদন্তি ‘ট্রিস্ট উইথ ডেস্টিনি’ বক্তৃতায় ইতিহাসে ঢুকে পড়েছিলেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দাবি, স্বাধীন ভারতে পরোক্ষ কর-এ এত বড় সংস্কার কখনও হয়নি। এই রাত তাই ঐতিহাসিক। যার উদ্যাপন এমন ঐতিহাসিক জায়গায় ছাড়া মানানসই হতও না। এই মুহূর্ত কেন্দ্র, সমস্ত রাজ্য, সব রাজনৈতিক দল এবং এ নিয়ে এর আগে কাজ করা প্রতিটি সরকারের সম্মিলিত প্রাপ্তি। উজ্জ্বল উত্তরাধিকার। একই কথা বললেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও।
কিন্তু তার আগে এ দিন এই নিয়ে রাহুল গাঁধীর কটাক্ষ, এ আসলে বরাবরের মতো মোদীর নিপুণ বিপণন, ‘ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট’। তাঁর অভিযোগ, সংস্কারের এত বড় সম্ভাবনাকেও খাপছাড়া ভাবে প্রস্তুতিহীন অবস্থায় শুরু করতে গিয়ে ‘তামাশা’য় পরিণত করেছে কেন্দ্র। কংগ্রেস বারবারই মনে করিয়েছে যে, এক সময়ে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে জিএসটি-র বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন গলা ফাটিয়েছেন খোদ মোদীই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও আক্রমণাত্মক। ফেসবুকে তাঁর বক্তব্য, ‘‘১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট মাঝরাতে ভারত স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। আর ৩০ জুন মধ্যরাতে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র গভীর সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে। ফিরতে চলেছে ইন্সপেক্টর রাজ।’’
জিএসটি-উৎসবের জৌলুস ফিকে করে দিতে অনুষ্ঠানে আসেনি কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ অধিকাংশ বিরোধী দল। কিন্তু তা বলে আয়োজনে ত্রুটি রাখেনি কেন্দ্র। আলোয় সেজেছে সংসদ ভবন। অনুষ্ঠানে এসেছেন রতন টাটা। ছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেলও। কিন্তু এই জাঁকজমক নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বলেছেন, ফি-বছর সংসদের এই আলোর সাজ তোলা থাকে ১৫ অগস্ট আর ২৬ জানুয়ারির জন্য। মোদী সরকার কি তবে কর-সংস্কারকে সেই পর্যায়ে নিয়ে গেল? অনুষ্ঠানে অবশ্য প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন নীতীশ কুমার। এসেছেন শরদ পওয়ার। শেষ মুহূর্তে মত বদলে এসেছে সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ শিবিরও।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ