নিজস্ব প্রতিবেদক:
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ‘কেষ্টা বেটা’ বানিয়ে ‘বাজেট নাটক’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।দলটির দাবি, অতিরিক্ত কর চাপিয়ে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে জন্য যে বাজেট করা হয়েছে তা আসলে ‘গরিব মারার বাজেট’
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট পাস হয়।
বাজেট পাসের পর রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাজেট নিয়ে দলের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন,আজকে যে বাজেট পাস হলো সেটি গণবিরোধী, উদ্ভট তামাশা, জীবনযাত্রার মানকে নিম্নমুখী করা, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিসহ মানব উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা ও জনগণের পকেট কাটার বাজেট।এ সময় বাজেটকে ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানান।রিজভী বলেন, ভোটের আগে ক্ষমতাসীন দলের লুটপাটের জন্যই বিশাল ঘাটতির এ বাজেট পাস করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাজেটে যে বিশাল অংকের ঘাটতি দেখানো হয়েছে তা পূরণ করা অসম্ভব। আবার বাজেটে যে কাল্পনিক প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে তাও বাস্তবসম্মত নয়।
বাজেটে সার্বিক বাজেট ঘাটতি ১লাখ ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা দেখানো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এ বিএনপি নেতা।তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বুধবার সংসদে ভিক্ষা অনুদানের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে তারা বেরিয়ে এসেছেন। অথচ এবারই বাজেটের ঘাটতি মোকাবেলায় বিদেশি ঋণ ৪৫ হাজার ৪২০ কোটি টাকা আর অনুদান হিসেবে ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে বলে বাজেটে বলা হয়েছে। এতে প্রতীয়মান হয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল ভাওতাবাজি।
বিদেশি ঋণ ও অনুদানের প্রভাবে বিনিয়োগযোগ্য অর্থ হ্রাস পেতে পারে এবং সুদ পরিশোধের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে আর্থিক ব্যবস্থাপনা চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়বে বলে আশঙ্কা জানান তিনি।
বাংলাদেশের ব্যাংকিংখাত অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় আছে বলে বৃহস্পতিবার সংসদে অর্থমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে বাজেট ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার সমালোচনা করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বাজেটের ঘাটতি মেটানো বন্যা প্রবণ নদীর তীরে বালির বাঁধ নির্মাণের শামিল।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশ নাকি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে।’ ভয়ংকর আর্থিক নৈরাজ্যের মধ্যে দেশকে ঠেলে দিয়ে যারা পার্শ্ববর্তী দেশের মাটিতে পা রেখে চলেন তারা নিজের দেশকে কতটুকু নিজের পায়ের ওপর দাঁড়াতে সক্ষম করে তুলেছেন তা দেশবাসী এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।
আমরা কতটা গণতান্ত্রিক যে, নিজ দলের এমপিরাও অর্থমন্ত্রীকে ছাড় দেয়নি বলে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তারও বিরোধিতা করেন রিজভী।
মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ আগামী ২ বছরের জন্য স্থগিত করার মধ্যে শঙ্কা দেখা করার কথা জানিয়েছেন বিএনপির এ মুখপাত্র।তিনি বলেন, এ আইন দু’বছরের জন্য স্থগিত করা অশুভ ভবিষ্যতের ইঙ্গিতবাহী। এতে মনে হয় সরকার আবারও যেনতেন প্রকারে ক্ষমতায় এসে পুনরায় আইনটি চালু করে জনগণের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেএড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদষ্টো কবির মুরাদ, আবুল খায়ের ভূইয়া, মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, কেন্দ্রীয় নেতা বদরুজ্জামান খসরু, আবুল কালাম আজাদ, এম এ মালেক প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা/এন আর