আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলকে রেকর্ড ২৭০ কোটি ডলার জরিমানা করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ইউরোপিয়ান কমিশন বলছে, মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল নিজেদের সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে ইউরোপের ব্যবহারকারীদেরকে নিজেদের কেনাবেচার সাইটে নিয়ে গেছে। ফলে গ্রাহকরা ‘প্রকৃত বিকল্প’ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। নিয়ন্ত্রকরা বলছেন, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে গুগলকে অবশ্যই এই আচরণ পরিবর্তন করতে হবে। অন্যথায় আরও জরিমানা গুনতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে। এ খবর দিয়েছে সিএনএন।
ইইউ’র এই নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান মার্গ্রেথ ভেস্টাগের বলেন, ‘গুগল যা করেছে তা ইইউ’র অ্যান্টি-ট্রাস্ট আইন মোতাবেক অবৈধ। গুগল অন্যান্য কোম্পানিকে নিজ গুণ ও সৃজনশীলতার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা করা থেকে বঞ্চিত করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইউরোপিয়ান গ্রহীতারাও প্রকৃত বিকল্প ও সৃজনশীলতার পূর্ণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।’
গুগল এক বিবৃতিতে বলেছে, বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের ক্ষেত্রে গুগল এমন নীতি অনুসরণ করে যা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য সহায়ক হয়। গুগলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বিনয়ের সঙ্গে এই রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি। আমরা কমিশনের এই সিদ্ধান্ত বিস্তারিত পর্যালোচনা করবো। আমরা আপিল করার চিন্তা করছি।’
কমিশন বলছে, গুগল সার্চ রেজাল্টে অবৈধভাবে অন্য পণ্যের তুলনায় নিজেদের পণ্যকে প্রাধান্য দিয়েছে। আর প্রতিদ্বন্দ্বী সাইটগুলোকে এমন জায়গায় স্থান দিয়েছে যেখানে ক্রেতারা কম ক্লিক করেন।
এর জন্য গুগলকে বার্ষিক বিক্রয়ের ১০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৯০০ কোটি ডলার জরিমানা করতে পারতো ইইউ। ইইউ কমিশন বলেছে, গুগলের প্রতিদ্বন্দ্বীরা এখন আদালতে জরিমানা চাইতে পারেন। মার্কিন কোম্পানি সহ শ’ শ’ কোম্পানি গুগলের এই আচরণের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে। এর আগে ২০০৯ সালে আরেক মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট ইন্টেলের বিরুদ্ধে ১০৬ কোটি ডলারের জরিমানা আরোপ করেছিল ইইউ। এতদিন সেটিই ছিল সর্বোচ্চ জরিমানার অংক। তবে ইন্টেল এখনও ওই জরিমানার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে।
তবে গুগলের বিরুদ্ধে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস নির্মাতা ও মোবাইল অপারেটরদের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও কোম্পানিটির বিজ্ঞাপন সেবা অ্যাডসেন্স নিয়েও ইউরোপিয়ান কমিশন তদন্ত করছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আয়কর ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বীতা ইস্যুতে ইউরোপে ক্রমেই নজরদারিতে পড়েছে মার্কিন কোম্পানিগুলো। আয়ারল্যান্ডে ১৪৭০ কোটি ডলারের আয়কর প্রদানে অ্যাপলকে নির্দেশ দিয়েছে ইইউ। মে মাসে ফেসবুকের বিরুদ্ধে বড় অংকের জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। একই মাসে, অ্যামাজন ইইউ’র দাবির মুখে নিজেদের কিছু নীতিমালা পরিবর্তনে সম্মত হয়েছে। জুনে পোশাক ও ক্রীড়া সামগ্রী নির্মাতা কোম্পানি নাইকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে একই অভিযোগে। তদন্তের মুখে চলচ্চিত্র ও মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল স্টুডিওজ।
দৈনিক দেশজনতা/এন আর