২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:৩৬

কঠর কড়াকড়ি নিরাপত্তায় শোলাকিয়ায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে অনুষ্ঠিত হলো দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত। এই জামাতে লাখো মুসল্লি একসঙ্গে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। সোমবার সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ঈদ জমাতে ইমামতি করেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ।

নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। বাংলাদেশ নিম্ম আয়ের দেশ থেকে নিম্ম মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করা হয়।

মোনাজাতের আগে ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন, এদেশের মানুষ কোনো চরমপন্থা কোনো দিন গ্রহণ করেনি। এক সময় দেশে বামপন্থার নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয়েছে, এখন ধর্মের নামে হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ এগুলো গ্রহণ করেনি, কোনো দিন গ্রহণ করবে না।

এছাড়া মুসল্লিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল প্রমুখ।

এর আগে সব ভয়কে জয় করে ভোর থেকেই মুসল্লিরা শোলাকিয়া মাঠে যেতে থাকে। কেউ গাড়িতে চড়ে, কেউ পায়ে হেঁটে জামাতে অংশ নিতে আসেন। সকাল ৯টার মধ্যেই পুরো মাঠ ভরে যায়।

তবে নিরাপত্তা কড়াকড়ি ও মোবাইল ফোন নিয়ে মাঠে প্রবেশে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনেক মুসল্লিকে ফিরে যেতে দেখা গেছে।

শোলাকিয়ায় গত বছরের জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এবার নেয়া হয় নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে সাজানো হয় পুরো আয়োজন। পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যা ব, আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিশ্চিদ্র ও কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

শহরসহ মাঠের প্রবেশপথগুলোতে বসানো হয় সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। নামাজ শুরুর আগে পুরো মাঠ আবার তল্লাশি করা হয়। শোলাকিয়া মাঠ ও শহরের যত অলিগলি আছে, সবখানে বসানো হয় নিরাপত্তা চৌকি।

এদিকে ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত উপলক্ষে শহরের মোড়ে মোড়ে নির্মাণ করা হয় শুভেচ্ছা তোরণ। রাস্তার দু’পাশে টাঙানো হয় রঙ-বেরংঙয়ের পতাকা ও ব্যানার। সব মিলিয়ে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশ ঈদের বড় জামাতের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সকালে দুটি বিশেষ ট্রেন ভৈরব ও ময়মনসিংহ থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে কিশোরগঞ্জে আসে। রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে শর্টগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়। জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে তিনটি, ৩ মিনিট আগে দুটি এবং ১ মিনিট আগে একটি গুলি ছুঁড়ে নামাজের জন্য মুসল্লিদের সংকেত দেওয়া হয়।

প্রচলিত রয়েছে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় সোয়া লাখিয়া যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :জুন ২৬, ২০১৭ ১:১৫ অপরাহ্ণ