২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:০৭

বাংলাদেশ শোলাকিয়ায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:

নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে শোলাকিয়ায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় এই শোলাকিয়ায়। এবার এখানে অনুষ্ঠিত হবে ১৯০তম ঈদুল ফিতরের জামাত । প্রতিবছরের মতো এবারও জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। জামাতে ইমামতি করবেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ।

গত ঈদুল ফিতরে ঈদ জামাতের আগে জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হয়েছিল কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া প্রাঙ্গণ ।নিহত হয়েছিল দুই কনস্টেবল, এক নারী ও এক জঙ্গি। একদিকে জঙ্গি আর পুলিশের রণাঙ্গন, অন্যদিকে ঈদের জামাত। কিশোরগঞ্জে গতবছর এভাবেই আতঙ্ক ও উদ্বেগে কেটেছিল ঈদুল ফিতরের দিনটি। তারপরও শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত। সেই দুঃসহ ক্ষত ভুলে এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত সফল করার সব আয়োজন চূড়ান্ত প্রায়। ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌরসভা শোলাকিয়ার জামাতকে সফল করতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। জামাতের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো দেখতে জেলা প্রশাসকসহ র‌্যাব-পুলিশ ও বিজিবির কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ। দফায় দফায় বৈঠকে বসছেন।

এরই মধ্যে মাঠে দাগ কাটা, বালু ফেলা, দেয়ালে রং করাসহ শোলাকিয়া ময়দানকে জামাতের উপযোগী করার কাজ শেষ হয়েছে। মুসল্লিদের চলাফেরা নির্বিঘ্ন করতে কিশোরগঞ্জ পৌরসভা নির্মাণ করেছে কয়েকটি নতুন রাস্তা ও একটি সেতু। সংস্কার করা হয়েছে ওজুখানা এবং টয়লেট। চলছে শহরের শোভাবর্ধনের কাজও। প্রস্তুত রাখা হেয়েছে বহুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও কয়েকটি মেডিক্যাল টিম। দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান জানান, পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিশ্ছিদ্র ও কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করবেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এ ছাড়াও শহরসহ মাঠের প্রবেশ পথগুলোতে থাকছে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। নামাজ শুরুর আগে পুরো মাঠ তল্লাশি করা হবে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে। শোলাকিয়া মাঠ ও শহরের যত অলিগলি আছে, সবখানে বসানো হবে নিরাপত্তা চৌকি।

জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস জানান, এ বছর ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ১৯০তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঈদ জামাত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইতিমধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। গত বছর শোলাকিয়া মাঠের নিকটবর্তী পুলিশ চেকপোস্টে সন্ত্রাসীদের হামলাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এ বছর নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সব দিক থেকে ঢেলে সাজানো হয়েছে।

শোলাকিয়া মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে শর্টগানের ৬টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হবে। জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি এবং ১ মিনিট আগে ১টি গুলি ছুড়ে নামাজের জন্য মুসল্লিদের সংকেত দেওয়া হবে।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :জুন ২৪, ২০১৭ ১:০৫ অপরাহ্ণ