নিজস্ব প্রতিবেদক:
নীলফামারীর তামাক চাষীরা অভিযোগ করে বলেছেন ‘পরিবেশ ধ্বংসকারী সিগারেট কোম্পানী পক্ষ নিয়ে পরিবেশ রক্ষার নামে দেশের বিড়ি শিল্পকে ধ্বংসের পায়তারা করছে অর্থমন্ত্রী।
তার এমন বৈষম্যমূলকনীতিতে বিড়ির কারখানা বন্ধ হওয়ায় এই শিল্পের শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান এবং তামাক চাষীদের জন্য বিকল্প বিনিয়োগের ব্যবস্থা না করায় তামাক চাষী ও শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে পরিবার পরিজন নিয়ে।’
মঙ্গলবার দুপুরে দিকে নীলফামারী শহরের বাটার মোড়ে ‘বিড়ি শিল্পের ওপড় অযৌক্তিক কর নির্ধারণ করে কুঠির শিল্প বিড়িকে ধ্বংসের প্রতিবাদে’ মানববন্ধন ও সমাবেশে এমন অভিযোগ করেন তামাক চাষীরা।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছর সিগারেটের তামাক শুকাতে ৬২ হাজার ৫০০ টন কাঠ প্রয়োজন পড়ে। যার বাজার মূল্য অন্তত ১০৫ কোটি টাকা। সিগারেটের তামাক শুকানোর নামে প্রতিবছর গাছ কেটে পরিবেশের ক্ষতি করে সিগারেট কম্পানী গুলো। কিন্ত বিড়ির তামাক শুকাতে কোন কাঠের প্রয়োজন যেমন হয়না তেমনি পরিবেশেরও ক্ষতি হয় না। অথোচ মাননীয় অর্থমন্ত্রী বিড়ি শিল্পকে তুলে দিয়ে পরিবেশের ক্ষতিকারক সিগারেট কোম্পানী গুলোর পক্ষ নিয়ে বিড়ি শিল্পের জন্য বৈষম্যমূলক শুল্কনীতি গ্রহণ করেছে অর্থমন্ত্রী। এতে দেশের লক্ষ লক্ষ তামাক চাষী তাদেও ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
‘প্রতিবছর বাজেটে বিড়ি শিল্পের ওপড় বৈষম্যমূলক শুল্ক নির্ধারণের করে আসছে সরকার। চলতি বছরের বাজেটেও এই শিল্পের ওপড় ১১০ শতাংশ করারোপ করে শিল্পকে ধ্বংশের পায়তারা চলছে। গত কয়েক বছরে শত শত বিড়ি ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এই বিড়ি শিল্পের মালিকরা তামাক ক্রয় বন্ধ করে দিয়েছে।
এতে কৃষকদের উৎপাদিত তামাক বিক্রির অভাবে ঘরেই পড়ে আছে। তামাক বিক্রি করতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তামাক চাষীরা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু অর্থমন্ত্রী ধুমপানমুক্ত করার নামে শুধুমাত্র বিড়ির ওপড় শুল্ক বাড়িয়ে দিয়ে সিগারেট কোম্পানীর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। যা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায়না।
তাই দ্রæত ২০০৭-০৮ অর্থবছরের বাজেটে ঘোষিত বিড়ি শিল্পের ওপড় বর্ধিত কর প্রত্যাহার করে কৃষকদের অবিক্রিত তামাক ঈদেও আগেই বিক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান বক্তরা।
প্রায় দুই ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে সেখানে জেলা তামাক চাষী সমিতির সভাপতি হামিদুল হকের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন, সমিতির সহ-সভাপতি সফিকুল ইসলাম তুহিন, সাধারণ সম্পাদক মাসুম ফকির, সদস্য বিকাশ চন্দ্র রায়, নিতাই চন্দ্র রায়, আমজাদ হোসেন, সাখোয়াৎ হোসেন, মোশাররফ হোসেন, রশীদুল ফকির, মজিদুল ইসলাম প্রমূখ।
এর আগে বেলা ১২ টার দিকে জেলা শহরের বড় বাজার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহর প্রদক্ষিণ করে।
জেলা তামাক চাষী সমিতি আয়োজিত কর্মসূচিতে জেলা সহ¯্রাধিক তামাক চাষী অংশ গ্রহণ করে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএম