২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:০৫

খুশি জামালপুরের চাষিরা লিচুর বাম্পার ফলনে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জামালপুরে রসালো মৌসুমি ফল লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার লিচু চাষিরা লাভবান হচ্ছে। লিচুর ফুল আসার সময়ে তারা চাষিদের কাছ থেকে বাগান কিনে নেন। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিগত ৪ বছর পর লিচুর বাগান কিনে লাভের মুখ দেখছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে জামালপুরে ৩’শ ৪০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের লিচুর ফলন এসেছে। সবচেয়ে বেশি লিচুর বাগান করা হয়েছে সদর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে। এই গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায় লিচুর বাগান করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিনের পর দিন কৃষকরা লিচু চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ ছাড়া নান্দিনা, গোপালপুর, রাঙ্গামাটিয়া, শ্রীপুর, শাহবাজপুর, ডেংগারগড়, গোদাশিমলাসহ ৬টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লিচুর বাগান রয়েছে।

এইসব লিচুর বাগানে সুস্বাদু দেশি, চায়না-১, চায়না-২, চায়না-৩, মঙ্গলবারী, বোম্বাই, এলাচি ও মোজাফ্ফরি জাতের লিচু পাওয়া যায়। ফরমালিনমুক্ত এখানকার লিচুর চাহিদা দেশ জুড়ে। কৃষকরা জানিয়েছেন, এ কারণে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারদের কাছে জামালপুরের এই লিচুর চাহিদাও প্রচুর। চায়না-৩ জাতের লিচু গত বছর  প্রতি শ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার থেকে ৮শ’ টাকায় এবার ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য জাতের লিচু বিক্রি হচ্ছে দেড়শ থেকে ২শ’ টাকায়।

সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নের কানিল গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে সেলিম বিএ পাশ করে সংসারের দারিদ্রতা দূর করার দীপ্ত বাসনা নিয়ে বাড়ির পার্শ্বে এক একর জায়গায় লিচুর বাগান করেছেন। তিনি জানান দিনাজপুর ও বগুড়া থেকে উন্নত জাতের চায়না-৩ (বেদানা) জাতের ১২০টি চারা এনে বাগানে রোপণ করেন। গাছের পরিচর্যাসহ এ পর্যন্ত তার মোট খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। প্রতিটি গাছের বয়স এখন চার থেকে পাঁচ বছর। তিনি আরো জানান, রোগ বালাই দমনে কীটনাশক প্রয়োগ না করে তিনি জৈব উপায়ে বালাই নাশক দমনের পথ অবলম্বন করেছেন। এতে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত লিচু পাওয়া যাচ্ছে। তবে আগামী দু’তিন বছরের মধ্যে এখান থেকে প্রতি বছর ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার আয় হবে বলে সেলিম জানিয়েছেন।

এদিকে এ অঞ্চলের লিচু চাষিদের অভিযোগ, কৃষি অফিসের শতভাগ সহযোগিতা না পেয়ে পুরনো পদ্ধতিতেই লিচু চাষ করছে তারা। কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে আধুনিক পদ্ধতিতে লিচু চাষ করে তারা আরো বেশি লাভবান হতো বলে কৃষকদের ধারণা।

জামালপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম কৃষকদের অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করে জানান, লিচু একটি ভিটামিন জাতীয় ফল হওয়ায় এদেশে এর চাহিদা প্রচুর। কৃষকরা লিচু চাষ করে বেশি লাভবান হচ্ছে বিধায় এ জেলায় দিনদিন লিচু চাষ বেড়ে চলছে। গত বছর জেলায় ৩’শ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান করা হলেও এ বছর ৩শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :জুন ১৬, ২০১৭ ১২:১১ অপরাহ্ণ