নিজস্ব প্রতিবেদক:
যুক্তরাজ্যে পশ্চিম লন্ডনের লাটিমার রোডে ২৭ তলা গ্রেনফেল টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেক মানুষ ওই ভবনে আটকা পড়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। আটকে পড়া মানুষসহ ভবনটি যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১টা ১৬ মিনিটে গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের দুই শতাধিক কর্মী আগুন নেভাতে কাজ করছেন। ১৯৭০ সালে নির্মিত আবাসিক এই ভবন নটিংহিলের কাছে অবস্থিত। ভবনে ১২০টি আবাসিক ফ্ল্যাট রয়েছে। লন্ডন পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় অনেক মানুষ আহত হয়েছেন। ভবনে আটকে পড়া বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, সকাল পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস ৩০ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানোর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ভবনটির একাদশ তলা দিয়ে বাসিন্দাদের বের করে আনার চেষ্টা করছেন উদ্ধারকর্মীরা। ঘটনাস্থলের কাছ দিয়ে যাওয়া পাতালপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলছেন, পুরো ভবনে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে আটকে পড়া অনেকেই ছাদ থেকে পড়ে গেছেন। কেউবা ইচ্ছে করেই লাফ দিয়েছেন। অনেকে এখনো ওই ভবনে আটকা।
ড্যানিয়েল নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসি রেডিও লন্ডনকে বলেছেন, ‘অনেকেই ছাদে আটকা পড়েছেন। আগুনের কারণে তাঁরা নিচে নেমে আসতে পারছেন না। সেখানে তাঁদের দগ্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমি নিজের চোখেই এসব দেখেছি। আমি এটাও দেখেছি, ভয়ে মানুষ ভবন থেকে লাফ দিচ্ছেন।’
লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (অপারেশন) স্টুয়ার্ট ক্রিস্টন বলেন, এ পর্যন্ত আহত ৩০ জনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনের পাঁচটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে ২০টির মতো অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।
লন্ডন ফায়ার সার্ভিস এক টুইট বার্তায় বলেছে, ভবনটির দ্বিতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। তারপর তা ২৭ তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। আগুন নেভাতে এখন পর্যন্ত ৪০টি ফায়ার ইঞ্জিন পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থলে থাকা বিবিসির সাংবাদিক অ্যান্ডি মুর বলেন, ভবনটির চারপাশ দিয়েই আগুন জ্বলছে। যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়তে পারে। চারদিকে ছাই উড়ছে। বিস্ফোরণের শব্দ হচ্ছে।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এই ঘটনাটি ‘ভয়াবহ ঘটনা’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
ঘটনাস্থলের পাশে থাকা অভিনেতা ও লেখক টিম ডাউনি বলেন, ‘এটা ভয়ংকর ব্যাপার। পুরো ভবনেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এখন সময়ের ব্যাপার, যেকোনো মুহূর্তেই ভবনটি ধসে পড়বে।’
দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ