বিনোদন প্রতিবেদক: চলচ্চিত্র-নাটক ও সংগীতাঙ্গনের গুণী তিন তারকা— বুলবুল আহমেদ, লাকী ইনাম ও সাবিনা ইয়াসমীন। আজ ৪ সেপ্টেম্বর এই তিন তারার জন্মদিন। ২০১০ সালে প্রয়াত হয়েছেন কিংবদন্তি অভিনেতা বুলবুল আহমেদ। এদিকে চ্যানেল আই জমকালোভাবে সাবিনা ইয়াসমীনের জন্মদিন উদযাপন করছে। অন্যদিকে লাকী ইনাম ঘরোয়াভাবে দিনটি উদযাপন করছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকাই সিনেমার দর্শকপ্রিয় অভিনেতা বুলবুল আহমেদ। ‘মহানায়ক’ উপাধি নিয়ে আজও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের অন্তরে বেঁচে আছেন তিনি। যাদের হাত ধরে বাংলা সিনেমার সোনালি দিন এসেছিল তিনি তাদেরই একজন। একই সঙ্গে সুদর্শন, সুশিক্ষিত, মার্জিত, রুচিশীল এই অভিনেতা অভিনয় গুণে জায়গা করে নিয়েছিলেন সব শ্রেণীর দর্শকের অন্তরে।
১৯৪১ সালের ৪ সেপ্টম্বর পুরান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন বুলবুল আহমেদ। তার অভিনীত প্রথম টিভি নাটক ‘বরফ গলা নদী’। এটি নির্মাণ করেছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন। বুলবুল আহমেদের উল্লেখযোগ্য টিভি নাটক হলো—‘মালঞ্চ’, ‘ইডিয়েট’, ‘মাল্যদান’, ‘বড়দিদি’, ‘আরেক ফাল্গুন’ ইত্যাদি। ধারাবাহিক ও খণ্ড নাটক মিলিয়ে প্রায় চার শতাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৭৩ সালে আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমামের (ইউসুফ জহির) ‘ইয়ে করে বিয়ে’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় পা রাখেন। পরের বছর আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘অঙ্গীকার’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। দুটি সিনেমা বাজিমাত করে। তবে বুলবুল আহমেদ ঢাকাই সিনেমার দর্শকের কাছে চিরদিন শ্রদ্ধেয় হয়ে থাকবেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি ‘শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’ চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় গুণে।
‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সকল শ্রেণীর দর্শকের অন্তরে স্থান করে নেন বুলবুল আহমেদ। এছাড়া ‘মহানায়ক’, ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘সূর্য্য কন্যা’ সিনেমায় বুলবুল আহমেদ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন অনন্য উচ্চতায়। বুলবুল আহমেদ অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো— ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘জীবন নিয়ে জুয়া’, ‘রূপালী সৈকতে’, ‘বধূ বিদায়’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দি ফাদার’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘দুই নয়নের আলো’ ইত্যাদি।
‘ওয়াদা’, ‘মহানায়ক’, ‘ভালো মানুষ’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’, ‘আকর্ষণ’, ‘গরম হাওয়া’, ‘কত যে আপন’ প্রভৃতি সিনেমার সফল নির্মাতা বুলবুল আহমেদ।
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে গানের পাখি বলেই ডাকা হয় সাবিনা ইয়াসমীনকে। কণ্ঠের জাদুতে এদেশের কোটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। ১৯৬৫ সালে টেলিভিশনে শিশুশিল্পী হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এরপর শুধুই সামনে চলার গল্প। ৪৯ বছরের বর্ণিল ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী গান। সংগীতের পথে এখনো হাঁটছেন তিনি। সুরের পাখি সাবিনা ইয়াসমীনের এই ক্লান্তিহীন পথচলায় সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গন।
লাকী ইনাম একাধারে অভিনয়শিল্পী, নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী, নাট্যকার, নাট্য নির্দেশক এবং নাট্য সংগঠক হিসেবে দারুণ দক্ষ। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে কাজ করছেন এ গুণী মানুষটি। মঞ্চের পাশাপাশি টিভি মিডিয়ায়ও দারুণ জনপ্রিয় লাকী ইনাম। কিন্তু মঞ্চকে ভালোবেসে নিরলস মঞ্চকর্মী হিসেবেই কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের দীর্ঘ পথ।