২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:০৮

ডাকসু নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ছাত্রসমাজে রাজনীতির সুবাতাস বইছে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডাকসু নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ছাত্রসমাজে রাজনীতির একটি সুবাতাস বইতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে নবগঠিত জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আগামী কাল ডাকসু নির্বাচন। এই নির্বাচনে ছাত্রদল অংশগ্রহণ করেছে আমি এটাকে স্বাগত জানাই। কারণ ২৮ বছর ডাকসু নির্বাচন হয়নি। আরেকটি ক্যান্সারের সৃষ্টি করা হয়েছিল। আমাদের দেশে যে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গড়ে ওঠার কারখানা সেই কারখানা বন্ধ করে দিয়েছিল তবে এই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ছাত্রসমাজে রাজনীতির একটি সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। এটা যদি চালু রাখা যায়, তাহলে আমাদের দেশের জন্য ভালো হবে আমরা ছাত্ররাজনীতির ব্যক্তি গড়ে তুলতে পারবো।

মির্জা ফখরুল বলেন, এমন সময় কৃষকদলের নেতৃত্বে পেলেন যখন দেশে ভয়াবহ সঙ্কট চলছে এ সংকট শুধু বিএনপির নয় গোটা জাতির। একটি বন্য হাতি যখন একটি খেতে ঢুকে সব ফসল নষ্ট করে তেমনি বাংলাদেশে একটি দানব ঢুকে সমস্ত অর্জন ধ্বংস করে ফেলেছে।

একেবারে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। আমাদের যা অর্জন আমাদের চিন্তা ভাবনা মূল্যবোধ আমরা যে ধারণার ওপর ভর করে সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছি সংগ্রাম করেছি লড়াই করেছি, রাষ্ট্র গঠন করেছি একটি মুক্তিযুদ্ধ করে রাষ্ট্র গঠন করেছে সেই সব কিছু এই দানব ধ্বংস করে ফেলেছে।

দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার বর্ণনা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গায়েবি মামলা কেউ দেখেছে বা শুনেছে বলে আমার জানা নেই। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা সংখ্যা ৯৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে আসামির সংখ্যা এটি ইংরেজিতে বলতে গেলে বলতে হয় ২.৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ২৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। ওরা (ক্ষমতাসীনরা) চিন্তাও করতে পারে না এমন অবস্থা হয়েছে।

দলের চেয়ারপারসন বেগম জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, একটি ভুয়া মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সাজা দেয়া হলো। নিম্ন আদালতে সেই সাজা কে বাড়িয়ে ১০ বছর করলো। তিনি এখন অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে বসতে পারেন না। তাকে বিছানা থেকে তুলতে একজন সাহায্যকারীকে দরকার হয়। এটা মানব অধিকারের একটি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই সরকারের বিরুদ্ধে এই রকম আইন লঙ্ঘনকারী ঘটনা আমি যদি বলেতে থাকি সারাদিন বলতে পারেবো।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ডিসেম্বরে একটি সংসদ নির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করেছিলাম জোট গঠন করে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে অংশগ্রহণ করেছিলাম। চিন্তা করেছিলাম জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটি আন্দোলনের মধ্যদিয়ে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো কিন্তু তারা একটি ক্রিমিনাল মাইন্ড নিয়ে গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কমিশন গঠন করার সময় আমরা বলেছিলাম একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হোক প্রেসিডেন্টের কাছে আমরা বলেছিলাম কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের একেবারে পোষ্যকে নিয়ে এ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। আর তারা এখন সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনে তারা যা করেছে এটা নজিরবিহীন। তারাই নির্বাচনের ব্যবস্থাকে একেবারে ধ্বংস করে ফেলেছে তাই দেশের জনগণের এখন নির্বাচনের প্রতি আস্থা নেই। যার ফলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যায়নি। উপজেলা নির্বাচনে জনগণের আগ্রহ নাই। আমরা পত্র-পত্রিকায় দেখতে পাচ্ছি ইতিমধ্যে ৭০-৮০ জন প্রার্থীকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বী জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি অনেককে বলতে শুনেছি প্রশাসন এখন তাদের (ক্ষমতাসীনদের) কে বলছে যে আপনাদেরকে আমরা জয়ী করেছি, নির্বাচন আমরা করেছি। এখন যা করার আমরা করবো আপনারা চুপ করে বসে থাকেন, এখন এই অবস্থা দাঁড়িয়েছে মানুষ এখন কোথায় যাবে কার কাছে যাবে?

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়ক তকদির হোসেন মোহাম্মদ জসিম, নাজিম উদ্দিন মাস্টার জামাল উদ্দিন খান মিলন, সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জিয়াউল হায়দার পলাশ, এস কে সাদি, এডভোকেট নাসির হায়দার, মাইনুল ইসলাম, মো. আলিম হোসেন, অধ্যক্ষ সেলিম হোসেন, মিয়া মো. আনোয়ার, বায়জিদ বোস্তামী, মোজাম্মেল হক মিন্টু, কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন, আবদুর রাজি, এম জাহাঙ্গীর আলম, কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, শরিফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশ :মার্চ ১০, ২০১৯ ৩:৪৭ অপরাহ্ণ