বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ইতিহাসে সেরা সাফল্যের কথা জিজ্ঞেস করা হলে নিঃসন্দেহে সবার আগে আসবে ২০১৫ সালের অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপের কথা। সেবার ২০১৪ সালের বিভীষিকাময় সময় পার করে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ খেলেছিল বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে।
সে দলের প্রায় সব খেলোয়াড়ই এখনো রয়েছেন দলের সাথে। নতুন যুক্ত হয়েছেন আরও প্রতিভাবান বেশ কয়েকজন। তিন বছর আগের অনভিজ্ঞ খেলোয়াড়রাও এখন পেয়েছেন অভিজ্ঞতা আর ‘পঞ্চপান্ডবে’র সবাই তো খেলে যাচ্ছেন আপন মহিমায়।
তাই সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা মনে করেন গত বিশ্বকাপের চেয়ে ভালো অবস্থানে থেকেই এবারের বিশ্বকাপ খেলতে যাবে বাংলাদেশ দল। এর প্রধান কারণ মূলত দলের খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতা।
রোববার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হেসে খেলে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে দুই বিশ্বকাপে নিজ দলের তুলনামূলক অবস্থার কথা তুলে ধরে মাশরাফি বলেন, ‘আমি বলবো, অবশ্যই এবার (ভালো অবস্থায় আছি)। কারণ, আমরা যাদের তরুণ খেলোয়াড় বলছি ওরা দুই-তিন-চার বছর খেলে ফেলেছে। সৌম্যর তো প্রায় চার বছরই হতে চলেছে। ইমরুল লম্বা সময় ধরে খেলেছে। লিটনও দুই-তিন বছর ধরে খেলেছে। এদের অভিজ্ঞতাও এখন অনেক বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি যদি পেস বোলারদের দেখেন সাঈফউদ্দিন ছাড়া আর সবাই বেশ অভিজ্ঞ। এখন পারফর্মও করছে বিশেষ করে এই সংস্করণে। ২০১৫ সালে বেশিরভাগই নতুন ছিল। তার মানে এই না বিশ্বকাপে গিয়ে সেমি-ফাইনালে খেলে ফেলবো। দল অবশ্যই ভালো শেপে আছে, যেহেতু অভিজ্ঞতায় এগিয়ে।’
সামনে বিশ্বকাপ, ওয়ানডে ফরম্যাটে দুর্দান্ত খেলছে দল। চলতি বছর খেলা ১৮ ওয়ানডের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ তথা ১২ ম্যাচেই জিতেছে বাংলাদেশ দল। ঘরের মাঠে তো আরও বেশি দুর্দান্ত। ৯ ম্যাচের মধ্যে জয় ৭টিতে।
গত অক্টোবরে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও জয়টা এসেছে হেসে খেলে। এমতাবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে আগামী বছরের বিশ্বকাপ প্রসঙ্গ এবং সে উদ্দেশ্যে দল গোছানোর পরিকল্পনার কথা।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের আগে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা জানিয়েছিলেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ৮-৯ জন সদস্য এরই মধ্যে অনেকটা নিশ্চিত। বাছাই-গবেষণা কিংবা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে স্কোয়াডের বাকি কয়েকজনের জন্য।
বিশ্বকাপের সাত-আট মাস আগে তাই স্বভাবতই চলে এ পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রসঙ্গ। মিরপুরের শেরে বাংলায় সহজেই প্রথম ম্যাচ জেতায় এ সিরিজ থেকেই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নামা যায় কি-না জিজ্ঞেস করা হয় বাংলাদেশ অধিনায়ককে। কিন্তু প্রশ্নের পক্ষে ইতিবাচক উত্তর দেননি মাশরাফি।
টাইগার অধিনায়কের মতে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। তাই পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে নিজেদের মূল পরিকল্পনাতে থাকাই শ্রেয়। মূলত চার ওপেনার তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার ও লিটন দাসকে নিয়ে সৃষ্ট ঘোলাটে পরিস্থিতিতে নতুন কিছু করা যায় কি-না সে ব্যাপারেই জানতে চাওয়া হয় মাশরাফির কাছে।
তিনি জানিয়ে দেন এখনো বেশ কঠিন সময় অপেক্ষা করছে সামনে। তাই পরিকল্পনামাফিক এগুনোই আপাতত দলের ইচ্ছা। রোববার ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় না (পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ আছে)। এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ বাকি। ঘরের মাঠে একধরনের চ্যালেঞ্জ থাকে, বাইরে গেলে আরেক চ্যালেঞ্জ থাকে।’
‘আর আমরা এখনো ওই লেভেলে যাইনি। আমরা একটা লেভেল পর্যন্ত আছে যেখানে প্রেসার বেশি আছে সেখানে কিন্তু বেশিরভাগ ম্যাচ, যদি ফাইনালের কথা বলেন আমরা ফেইল করেছি।’ – আরও বলেন মাশরাফি।