২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:৪৬

বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট অপদার্থ-বদমায়েশ: অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিককে অসম্ভব বাজে লোক, অত্যন্ত অপদার্থ ও বদমায়েশ বলে আখ্যায়িত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ২০১৮ সালের ঢাকা আন্তজার্তিক বাণিজ্য মেলায় সর্বোচ্চ ভ্যাটদাতাদের সম্মাননা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুইয়ার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা চারজন এখানে আছি। আমাদের দায়িত্বের সময়  বিশ্ব ব্যাংকের সভাপতি ছিল রবার্ট জোয়েলিক। সে অসম্ভব বাজে লোক ও অত্যন্ত অপদার্থ। তার চাকরির শেষ সময়ে সে বাংলাদেশের বিষয়ে বলল, কোন এক কনসালটেন্ট নিয়োগের বিষয়ে আমরা চক্রান্ত করছি। ঘুষ নেওয়ার জন্য চক্রান্তের অজুহাত তুলে সে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্ব ব্যাংকের যে ঋণ বরাদ্দ ছিল সেতা বাতিল করল।

তিনি বলেন, সে এটা তার চাকরির শেষ দিনে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ করা অর্থ বাতিল করে দিয়ে চলে গেল। এটা আমাদের জন্য সৌভাগ্য। সে বদমায়েশটা সেদিনই বিদায় হয়। মুহিত বলেন, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সমাঝোতা করার জন্য। কারণ বিশ্ব ব্যাংক আমাদের সবচেয়ে বড় দাতা সংস্থা। আমাদের জন্মলগ্ন থেকেই বিশ্বব্যাংকের সাহয্য পাই। আমাদের জন্মলগ্নে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন দুটি বাজেটের সম্পূর্ণ অর্থ বিশ্ব ব্যাংক থেকে আসতো। বরং বাজেটের অর্থের চেয়ে বেশিও আসতো।

তিনি বলেন, আগে জাতীয় আয়ের ৯ থেকে ১০ শতাংশ বিদেশি সাহায্য আসতো। এখন এটা মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ হলেই আমাদের জন্য যথেষ্ট। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন বিশ্ব ব্যাংককে দাতা বলতে চাই না। তারাও এটা পছন্দ করে না। এখন আমরা তাদেরকে ডেভেলপমেন্ট পার্টনার বলতে পারি।

পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে মুহিত বলেন, আমরা আজকে এখানে যে চারজন উপস্থিত আছি, চারজনই বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিকের চক্রান্তে পড়ে যাই। আর প্রকাশ্যভাবে আমরা পাঁচজন চিহ্নিত হই। প্রথমজন হলেন- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দ্বিতীয়জন আমি, তৃতীয়জন তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, চতুর্থ জন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান ও পঞ্চমজন হলেন এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান ও তৎকালীন যোগাযোগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভুইয়া।

তিনি বলেন, তখন বিশ্ব ব্যাংককে সন্তুষ্ট করার জন্য অনেক কিছু করেছি। মশিউর রহমান পদত্যাগ করেন। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী আর আমি বিচলিত হইনি। আমরা সে যুদ্ধটা চালিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী প্রথমদিনই বলে দিলেন, আমরা এ ঋণ চাই না। কারণ তারা আমাদেরকে অসম্মান করেছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমার চিন্তা ছিল এই অভিযোগটাকে অবশ্যই তুলে নিতে হবে। কারণ এখানে ঘুষের জন্য ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলম। এ যুদ্ধটা আমরা অনেক দিন চালিয়ে গেলাম। অবশেষে নতুন বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট আসার পর সিদ্ধান্ত নিলেন পদ্মা সেতুর বাতিল অর্ডার প্রত্যাহার করা হবে। তারা আমাদের কাছে বিশ্বব্যাংকে অর্থায়নের জন্য নতুন প্রকল্প প্রস্তাব চায়।

তিনি বলেন, তখন আমরা বললাম, আপনারা বিদায় নিতে পারেন। আপনাদের কাছ থেকে পদ্মা সেতুর প্রজেক্টটা নিজেরা নিয়ে নিলাম। আমরা ঠিক করলাম, পদ্মা সেতুর জন্য আমরা কারো কাছ থেকে সাহায্য নিব না। নিজেদের সামর্থ্যে এ প্রকল্পের কাজ করব। সময় লাগলে লাগুক। খুশির খবর হলো, পদ্মা সেতু এখন নিজেদের অর্থে বাস্তবায়ন হচ্ছে। আমার ধারণা, আগামী ২০১৯ সালের মার্চ মাসে এটা উদ্বোধন হবে।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৮ ৩:৫৯ অপরাহ্ণ