স্বাস্থ্য ডেস্ক:
প্রস্রাবের বেগে রাতে যাদের ঘুম ভাঙে তাদের খাদ্য তালিকায় লবণের ব্যবহার নিয়ে ভাবতে হবে। লবণের কারণেই আপনাকে সাধের ঘুম ছেড়ে টয়লেটে গিয়ে বসতে হচ্ছে। জাপানের একদল চিকিৎসকরা গবেষণা করে এই তথ্য জানিয়েছেন। শারীরিক এই সমস্যাটির নাম নক্টারিয়া। প্রধানত ষাটোর্ধদের পেলে বেশ জাপ্টে ধরে এই সমস্যা। ফলে তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, আর জীবনাচারেও আনে নানা সঙ্কট। ৩০০ জনের ওপর জরিপটি চালিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা দেখেছেন লবণ গ্রহণের পরিমান কমিয়ে দিলে এদের বার বার প্রসাব করতে যাওয়ার ঝামেলা কমে। রাতে তো বটেই। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা বেছে বেছে খেতে বলেছেন, যাতে সমস্যাটি শরীরে বাসা বাঁধতে না পারে।
জাপানের নাগাসাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্প্রতি লন্ডনের ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব ইউরোলোজি কংগ্রেসে রিপোর্টটি উপস্থাপন করেন। বিবিসি সে খবর দিয়েছে। তিন মাস ধরে খাবারে লবণ গ্রহণে তাদের অভ্যাসের দিকে নজর রেখেছেন গবেষকরা। আর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পরামর্শ দিয়েছেন, যেনো দ্রুতই লবণ খাওয়া কমিয়ে দেন।
তাতে দেখা গেছে প্রস্রাবের জন্য টয়লেটে যাওয়ার হার এক মাসেই অর্ধেকে নেমেছে। কেবল যে রাতেই হচ্ছে তা নয়, দিনেও কমেছে প্রস্রাবে যাওয়ার হার। কয়েকজনকে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি লবণ দিয়ে দেখা গেছে রাতে তাদের বার বার টয়লেটে যেতে হচ্ছে।
সাধারণত ঘুমের আগে কতটুকু পানি পান করা হলো তার সাথেই প্রস্রাবের বেগের সম্পর্ক বলে ধারণা করা হয়। আর প্রস্রাবের সঙ্গে চিনির একটা সম্পর্ক সকলেরই জানা। কিন্তু এই গবেষণায় তার সঙ্গে মিললো লবণের সম্পর্কও। গবেষকরা দেখেছেন পানি পান করে ব্লাডার ভরে রাখেননি এমন মানুষেরাও রাতে প্রস্রাবের বেগে উঠে পড়ছেন। পঞ্চাশোর্ধ মাত্রই এই প্রবনতা লক্ষ্য করা যায়।
আমাদের যখন বয়স বাড়তে থাকে তখন হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, আর তাতে রাতে বেশি বেশি প্রস্রাব চাপে। পুরুষদের প্রোস্টেড গ্ল্যান্ডও বয়সের সাথে সাথে বড় হয়। আর প্রোস্টেট বড় হওয়া মানেই হচ্ছে প্রসাবের থলিতে চাপ তৈরি, আর সে কারণেও বেশি বেশি প্রস্রাব চাপে।
তবে সেখানেই গল্পের শেষ নয়। নক্টারিয়া নামের রোগের কারণেও তা হতে পারে। বেশি লবণ খাওয়ার অভ্যাসই যার অন্যতম কারণ। আর এই নক্টারিয়ার সূত্র ধরে আপনার হতে পারে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিংবা ঘুমমন্দা।
কতটুকু লবণকে আমরা বেশি লবণ বলবো?
বড়দের জন্য দিনে ৬গ্রাম পর্যন্ত লবণ খাওয়ার কথা বলা হয়। যা প্রায় ২.৪ গ্রাম সোডিয়ামের সমান। আর শিশুদের জন্য তা মাত্র ২ গ্রাম, যা ১০ বছর বয়স পর্যন্ত ৫ গ্রামে উন্নীত করা যায়। আর ১১ পেরিয়ে গেলে সেই শিশুদের দিনে ৬ গ্রামের বেশি নয়।
কোনো কোনো খাবার মুখরোচক করে তুলতে একটু বেশিই লবণ লাগে। রুটি আলুনি হলে খাওয়া যাবে না, যতটা ভাত খাওয়া যায়। রুটিতে লবণ বেশি ব্যবহার হয়। চিজ, চিপস, পাস্তা শিশুদের প্রিয় খাবার, যাতে লবণ বেশি লাগে।
তাই যখনই কোনো তৈরি খাবার কিনবেন, প্রতি ১০০ গ্রামে কতটুকু লবণ ব্যবহার করা হয়েছে তা দেখে কিনুন। দিনের লবনো ইনটেক হিসাবের মধ্যে রাখুন।
তথ্য সূত্র: বিএইচ
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ