বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ায় কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। হাটে গরু ছাগলের আমদানি বেশি। সাধারণ ক্রেতাদের তুলনায় হাটে পাইকারি ক্রেতা বা ব্যাপারীদের সংখ্যা অনেক বেশি। দালালদের দৌরাত্ম্য হাটে রয়েছে । গরুর দালালদের কারণে সাধারণ ক্রেতাদের কোরবানির পশু কিনতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতা ও দালালের দর-কষাকষির মধ্যে পশু কেনাবেচা চলছিল। এছাড়া হাটে জাল টাকাও লেন-দেন হচ্ছে। জাল টাকা নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে রীতিমত আতঙ্ক। বগুড়া শহর ও শহরতলিসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় কোরবানির পশুর বড় বড় হাট বসে। বগুড়া সদর, দুপচাঁচিয়া, শিবগঞ্জ, গাবতলী ও শাজাহানপুর উপজেলায় এরকম বড় হাটের সংখ্যা প্রায় ১৫টির বাইরেও অনেক পশুর হাট রয়েছে। সবচেয়ে বড় হাট বসে মহাস্থানে, ধাপের হাট, সুলতানগঞ্জ হাট, সাবগ্রাম। পুলিশ প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, বগুড়ায় এবার কোরবানির পশুর হাট বসেছে ৭৮টি স্থানে।
কোরবানি হাটগুলোতে প্রচুর পশু আমদানি হচ্ছে। তবে ক্রেতা কম। সাধারণ ক্রেতারা এখনো পুরো দমে কোরবানির পশু কেনা শুরু করেনি। ব্যাপারীরা এখানকার হাট থেকে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। তবে হাটে দালাল চক্রের কারণে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিক্রেতাসহ হাট কর্তৃপক্ষ বলছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই সাধারণ ক্রেতাদের সংখ্যা আরো বাড়বে।
বগুড়ার সবচেয়ে বড় পশুর হাট মহাস্থান ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানি পশুর আমদানি অনেক বেশি। দামও ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। সাধারণ ক্রেতা ও গরুর ব্যাপারীরা বলছেন, দাম স্বাভাবিক। সাধারণ ক্রেতাদের বক্তব্য, দালালদের কারণে গরুর দাম করতে গিয়ে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এখান থেকে চট্টগ্রাম ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যাপারীরা প্রচুর গরু কিনছেন। তবে অনেক বড় গরু বিক্রেতা জানিয়েছেন, গরুর খাবার দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমান বাজার দরে তাদের লাভ হচ্ছে না। দাম নিয়ে তারা খুশি নয়। বুধবার মহাস্থান হাটে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ লাখ টাকা দামের গরু উঠেছিল। গত মঙ্গলবার শহরের আরেক হাট সাবগ্রাম হাটেও হাজার হাজার পশু উঠেছিল।
কোরবানির হাটগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জাল টাকা ধরতে ডিটেক্টর মেশিন বসানো হয়েছে। গরু বিক্রেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, খাবারের দাম বেশি। তবে গরুর দাম কম। আরেক ব্যবসায়ী জানান, বগুড়ার আশপাশের কৃষক ও খামারিরা হাটে গরু এনেছেন। তবে ভারতীয় গরু হাটে বেশি। পশু ক্রেতা সাইফুল ইসলাম জানান, বর্তমানে বাজারের অন্যান্য জিনিসের যে দাম তাতে কোরবানির পশুর দাম কমই আছে। গরুর দাম কমলেও বাজারের মাংস দাম কমে না এবং কোরবানি উপলক্ষে সব ধরনের মসল্লার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে গরু কিনতে এসেছেন ব্যবসায়ী ছালাম জানান, তারা ৫০টি গরু কিনেছেন। আরো গরু কিনবেন। এগুলো চট্টগ্রামে নিয়ে যাবেন। সেখানে বিক্রি হবে। মহাস্থান হাট পরিচালনাকারী মো. ফজলে রনি বলেন, পুলিশের পাশাপাশি তারা বাড়তি নিরাপত্তা নিয়েছেন।
বগুড়া পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান বিপিএম জানান, কোরবানির হাটগুলোতে শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক পরিবেশে যেন কেনা বেচা সেজন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জাল টাকা ধরতে মেশিন বসানো হয়েছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি