ধর্ম অবমাননা ও সহিংসতা উস্কে দেওয়ার দায়ে জাকার্তার বিদায়ী গভর্নরকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আহোক নামে পরিচিত দণ্ডপ্রাপ্ত বাসুকি টিজাহাজা পুরনামা ইন্দোনেশিয়ার রাজধানীর প্রথম চীনা বংশোদ্ভূত খ্রিস্টান গভর্নর ছিলেন।
এক প্রচারণা বক্তৃতায় কোরানের একটি আয়াত উল্লেখের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের অবমাননা করায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। অভিযোগ অস্বীকার করে আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিশ্বব্যাপী আলোচিত ইন্দোনেশিয়ার এই মামলাটিকে দেশটির ধর্মীয় সহিঞ্চুতার একটি পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসলাম সম্পর্কে পুরনামার উক্তি ধর্মীয় কট্টরপন্থিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার করেছিল। তার বিচারের দাবিতে নিয়মিত সভা-সমাবেশ-মিছিল করে আসছিল তারা। এসব সভা-সমাবেশে অনেক কট্টরপন্থী পুরনামার মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছিল।
রায় ঘোষণার আগে পুরনামার পক্ষের প্রতিবাদকারী ও তার বিরোধীরা জাকার্তায় সর্বোচ্চ আদালতের বাইরে জড়ো হয়। এক পক্ষ তাকে বেকসুর খালাস দেওয়ার ও অপরপক্ষ তাকে লম্বা সময়ের জন্য কারাদণ্ড দেওয়ার দাবি জানাচ্ছিল। সাঁজোয়া যান নিয়ে দাঙ্গা পুলিশ দুই পক্ষের মাঝে অবস্থান নিয়ে তাদের আলাদা করে রেখেছিল।
এ সময় আশেপাশে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর প্রায় ১৫ হাজার নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে জাকার্তার তৎকালীন গভর্নর জোকো উয়িদোদো ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে পুরনামা নতুন গভর্নর নির্বাচিত হন। গত ৫০ বছরের মধ্যে জাকার্তার প্রথম অমুসলিম গভর্নর ছিলেন তিনি।
পুরনামা একইসঙ্গে চীনা বংশোদ্ভূত ইন্দোনেশীয় এবং খ্রিস্টান হওয়ায় মুসলিম প্রধান ইন্দোনেশিয়ায় সংখ্যালঘু ছিলেন তিনি, সে কারণে তার দেশটির রাজধানীর গভর্নর নির্বাচিত হওয়া খুব উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল। দুর্নীতি-বিরোধী শক্ত অবস্থান ও সোজাসাপ্টা কথা বলা রাজনীতিক হিসেবে তার একটি অবস্থান তৈরি হয়েছিল, কিন্তু ধর্মাবমানার অভিযোগে তার সেই অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায়।
জীবনমানের উন্নয়নের প্রচেষ্টার জন্য জাকার্তার অনেকের মধ্যে জনপ্রিয়তা ধরে রাখলেও গত মাসের গভর্নর নির্বাচনে রক্ষণশীল মুসলিম প্রার্থী আনিয়েস রাশিয়িদ বাসওয়েদানের কাছে পরাজিত হন তিনি।
এম/এম