নিজস্ব প্রতিবেদক:
জলদুর্ভোগ থেকে চট্টগ্রামের নগরবাসীকে রক্ষার স্বার্থে মহেশখালের উপর নির্মিত বাঁধটি অপসারণের কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল খালেদ ইকবাল যৌথভাবে বাঁধ অপসারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এ সময় চসিক মেয়র বলেন, জোয়ারের পানি ঠেকানোর লক্ষ্যে আগ্রাবাদ-হালিশহর এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী ভিত্তিতে মহেশখালের উপর একটি বাঁধ নির্মাণ করেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক বর্ষা মৌসুমের অতিবৃষ্টি, তার সাথে জোয়ারের পানিরচাপে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাপক জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। তাই জনদূর্ভোগ লাঘবের লক্ষে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এর যৌথ সভার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে আজ মহেশখালের উপর নির্মিত অস্থায়ী বাঁধটি অপসারণ কার্যক্রম শুরু করা হলো।
এ সময় মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতার হাত থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাকে স্থায়ীভাবে রক্ষার জন্য মহেশখালের মুখে পাম্পহাউস সহ সুইস গেইট নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
মেয়র বলেন, নগরীতে বিদ্যমান ৪০টি খালের মধ্যে অনেকগুলোই দখল ও দূষণের কবলে পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া অসচেতনভাবে নালা-নর্দমার মধ্যে জনসাধারণের ময়লা আবর্জনা ফেলা, পাহাড়ের বালি মিশ্রিত পানি প্রবাহের কারণে নালা-নর্দমা ভরাট হয়ে যাওয়া সহ অতি বৃষ্টির সাথে জোয়ার এবং জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব এর কারনে নগরীতে জলাবদ্ধতার মাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। যথাসময়ে আরএস খতিয়ান মূলে ডিজিটাল সার্ভের মাধ্যমে ভরাট হয়ে যাওয়া খালগুলো পুনরুদ্ধার এবং অবৈধ দখলদারীদেরকে উচ্ছেদে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসময় বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল খালেদ ইকবাল বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে না। জনস্বার্থে মেয়রের সাথে বন্দর কর্তৃপক্ষ এক হয়ে কাজ করে যাবে।
এসময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলররা, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমেদ, সিএমপি পুলিশ এর উপ পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার, সহকারী পুলিশ কমিশনার, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন স্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ, ২০১৫ সালের ২রা সেপ্টেম্বর মহেশখালের উপর অস্থায়ী ড্যাম নির্মাণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী মো. শাহজাহান খান। তবে আগ্রাবাদ এলাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মহেশখালের উপর নির্মিত অস্থায়ী বাঁধটির পানি নিষ্কাশনের সু-ব্যবস্থা না থাকার কারণে নগরীর আগ্রাবাদ ও হালিশহর এলাকা প্লাবিত হয়ে চরম জনদুর্ভোগে পড়েছে ঐ এলাকার মানুষ। এই অবস্থায় গত ১লা জুন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় মহেশখালের উপর নির্মিত অস্থায়ী বাঁধ (ড্যাম) অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো। সেই সিদ্ধান্তের প্রায় ১২ দিন পরে এসে আজ বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে এই বাঁধ অপসারণের কাজ শুরু করা হয়।
দৈনিক দেশজনতা /এমএম