আতিউর বলেন, ‘২০০৭-২০০৮ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্ধা দেখা গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে উদ্যোগগুলো নিয়েছিল সেটি নিতে হবে। সেসময় সিএসআর ফান্ড ৫০ থেকে ৬০০ কোটিতে উন্নীত করা হয়।’
সাবেক এ গভর্নর বলেন, সরকারকে বাজেট কাটছাঁট করতে হবে। বাজেটে স্বাস্থ্য ও মানবিক কাজে নজর দিতে হবে। রেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছেন। সেটি হয়তো আমাদের পক্ষে করা সম্ভব নয়, তবে সস্তায় সবার কাছে খাবার পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।’
আতিউর বলেন, ‘সিএসআর এর অর্থ ব্যাংক সরাসরি যেতে না পারলে স্থানীয় শাখা বা সংগঠনের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। এ ছাড়া ডাক্তারদেরও বাঁচাতে হবে। এ জন্য সিএসআর থেকে ডাক্তারদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিতে পারে। আবার এগুলো যে কোম্পানি উৎপাদন করে তাদের স্বল্প সুদে ঋণও দেয়া যেতে পারে।’
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যেন আর্থিক খাত সংকটে না পড়ে সেজন্য কয়েকটি পরামর্শও দিয়েছেন আতিউর রহমান। প্রথমত, তারল্য সংকট মোকাবেলায় সিআরআর কমাতে হবে। দ্বিতীয়ত, বন্ড কিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা বাজারে ছাড়াতে পারে। তৃতীয়ত, মনিটারি পলিসি শিথিল করতে হবে। চতুর্থত, ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনতে হবে, এটি ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক করেছে এবং অব্যাহত রাখতে হবে। পঞ্চম, রেপোর সুদহার কমানো এবং সময়সীমা বাড়িয়ে ন্যূনতম ৬ মাস করা।
এ ছাড়া অর্থসংস্থানের জন্য সরকারের প্রতি আরও দুটি পরামর্শ দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ। এর একটি হলো, ২০১৯-২০ অর্থবছরের নির্ধারিত বাজেটের কাটছাঁট করা। বা বেশি প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়া স্বল্প প্রয়োজনীয় অর্থ খরচ আপাতত বন্ধ করা।
তার অন্য পরামর্শটি হলো, ১ শতাংশ জিডিপি অর্থাৎ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এর সমান অর্থ কেন্দ্রীয় বা বাণিজ্যক ব্যাংক থেকে ৫ থেকে ১৫ বছর মেয়াদি ঋণ নিয়ে স্বাস্থ্য ও মানবিক খাতে খরচ করা।
এ ছাড়া করোনার প্রভাবে ক্লান্তিকালীন সময় পার করে দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে এসএমই, নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, কৃষি ঋণের দিকে বেশি নজর দিতে হবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছেন তিনি।