আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টসহ অন্যান্য পর্বতে আরোহণ ও ‘অন্য অ্যারাইভাল ভিসা’ বন্ধের ঘোষণায় ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার লোকসানের পাশাপাশি নেপালে প্রায় ২০ হাজার মানুষ চাকরি হারাবে।
নেপালের সংবাদমাধ্যম কাঠমণ্ডু পোস্ট জানায়, দেশটির অধিকাংশ মানুষই পর্বত জীবিকা নির্বাহ হয় পর্বতারোহণ থেকে। প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পর্বতারোহণের সাথে জড়িত। আর টুরিস্ট গাইড রয়েছে ৪ হাজার ১২৬ জন।
২০১৪ সালে দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয় একটি জরিপ পরিচালনা করে। জরিপে দেখা যায়, প্রতি ৬ জন পর্যটকের কারণে একটি নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। প্রতি বছর পর্বতারোহণ থেকে ৪ মিলিয়ন ডলার আয় করে দেশটির ফেডারেল সরকার।
মাউন্ট এভারেস্টে বিদেশীদের আরোহণের লাইসেন্স ফি হচ্ছে ১১ হাজার ডলার। পর্বতারোহণের জন্য আরো ৪০ থেকে ৯০ ডলার পর্যন্ত খরচ করতে হয় প্রত্যেক আরোহীকে।
চলতি বছর এভারেস্টে আরোহণের জন্য ৩৫০ জন পর্বতারোহী রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। কিন্তু করোনা আতঙ্কে তাদের অনুমতিপত্র বাতিল করা হয়েছে।
সাধারণত এভারেস্টে ৫ জন পর্যটকের আরোহণের সময় তারা ৩০ জন শেরপা ও একজন টুরিস্ট গাইড ভাড়া করে। তারা প্রতিদিন ১০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার সরকারের সিদ্ধান্তের ঘোষণায় পর্বতারোহণের বিভিন্ন পণ্য বিক্রির সাথে জড়িত ১০ হাজার মানুষ বেকার হয়ে গেছেন।
শুক্রবার নিজেদের ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ বন্ধের ঘোষণা দেয় নেপাল সরকার। ১৪ মার্চ শনিবার থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত আড়াই মাসে বিশ্বের ১৪৫টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কিছুটা কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে এর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় নিহত হয়েছেন ৫৪৩৬ জন। অপরদিকে ৭২ হাজার ৫২৯ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৭ জন।
এই ভাইরাসে শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৮২৪ জন। আর মারা গেছেন ৩ হাজার ১৮৯ জন। চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও নিহত হয়েছেন ইতালিতে। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৬০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১২৬৬ জনের। ইতালির পরেই অবস্থান করছে ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়া। ইরানে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৩৬৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৫১৪ জন। দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮ হাজার ৮৬ এবং মারা গেছে ৭২ জন।