মঙ্গলবার সকালে করোনা সংক্রমণ বিষয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে সংক্রমণ ঘটার পর বিশ্বের প্রায় একশ দেশে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। ইতোমধ্যে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে গত রবিবার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ সম্প্রতি ইতালির দুটি শহর থেকে দেশে ফিরেছেন। আর তাদের একজনের সংস্পর্শে এসে পরিবারের আরেক নারী সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সবার অবস্থাই শঙ্কামুক্ত এবং তিনজনকেই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।
মঙ্গলবার নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মীরজাদী ফ্লোরা বলেন, করোনা আক্রান্ত তিনজনই শঙ্কামুক্ত। করোনা শনাক্ত তিনজনের সংস্পর্শে থাকা চারজনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হলেও তাদের কারোনার কোনো লক্ষণ-উপসর্গ নেই। এছাড়া সন্দেহভাজন হিসেবে আরও আটজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এর বাইরে বিদেশ থেকে যারা আসছেন তাদের অনেককে আমরা সেলফ-কোয়ারেন্টাইনে (স্বেচ্ছায়) থাকতে বলছি, তাদের অনেকে তা মানছেনও। ওই সেলফ কোয়ারেন্টাইনে যারা আছেন, তাদের আইইডিসিআরের হিসাবে ধরা হচ্ছে না।
আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সাতজনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে দেশের বাইরে থেকে আগতদের হাঁচি-কাশি থাকলে ঘরে অবস্থান করে হটলাইনে যোগাযোগের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাদেরকে কোয়ারেন্টাইন করা হচ্ছে তাদের তথ্য দিচ্ছে আইইডিসিআর।
মীরজাদি ফ্লোরা বলেন, ‘এই মুহূর্তে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোয়ারেন্টাইনে আছে চারজন। আর আইসোলেশনে আছেন আটজন।’
কোয়ারেন্টাইনে এবং আইসোলেশনের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আইসোলেশন হচ্ছে রোগীর জন্য প্রযোজ্য। সেক্ষেত্রে আটজন আইসোলেশনে আছে। কোয়ারেন্টাইন হচ্ছে যারা রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন। আমরা যে তিনজন রোগীকে শনাক্ত করেছি রোগী হিসেবে তাদের সংস্পর্শে যারা ছিলেন সেই চারজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।’
শনাক্ত হওয়া কোনো রোগী আশঙ্কামুক্ত হলেও তাদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী হসপিটালেই রাখা হচ্ছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, ‘করোনা রোগীদের খুবই মৃদু উপসর্গ ছিল এবং সেটাও চলে গিয়েছে। তবে তাদের এখনই ছাড়ছি না। কারণ এখনো তারা আমাদের পর্যবেক্ষণে আছেন।’
মীরজাদী ফ্লোরা বলেন, আইইডিসিআরের হটলাইনে গত ২৪ ঘণ্টায় কল এসেছে ২৭৭৮টি। বেশিরভাগই করোনা সংক্রান্ত। এছাড়া মাস্ক কোথায় পাওয়া যাবে, স্যানিটাইজার পাওয়া যাচ্ছে না, বিদেশ থেকে এলে কি করণীয় কিংবা কোয়ারেন্টাইন করতে হবে কিনা ইত্যাদি সম্পর্কিত কল এসেছে।
বয়স্ক ব্যক্তিদের বিশেষ করে যারা বিভিন্ন রোগে ভুগছেন তাদের পরামর্শ দিয়ে আইইডিসিআর পরিচালক জানান, ‘খুব জরুরি না হলে আপনারা বাইরে কিংবা ভিড়ের মধ্যে অবশ্যই যাবেন না। বিদেশ থেকে আগতদের কাছে যাবেন না।’
এছাড়া আন্তর্জাতিক সভা-সম্মেলন করার জন্য নিরুৎসাহিত করছে আইইডিসিআর।