সোমবার (৯ মার্চ) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই পরামর্শ দেন।
আদালতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষে প্রতিবেদন তুলে ধরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. মো.আমিনুল হাসানের দেওয়া এই প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর আদালত বলেন, ‘করোনা ভাইরাস ছড়ানোর পর মাস্ক ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। এখন মানুষের মধ্যে একটা সচেতনতাও তৈরি হয়েছে। সেই সুযোগে এটা নিয়ে বাজারে কোনও ধরনের ব্যবসা হয় কিনা পেঁয়াজের মতো, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। কেউ যেন বেশি দাম না নিতে পারে, মজুত না করতে পারে।’
এ সময় আদালতে থাকা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মওদুদ আহমদ বলেন, ‘করোনার ব্যাপকতা যে কত, তা সরকারও অনুভব করেছেন। কিছু স্টেপ উনারা নিয়েছেন। মাস্ক নিয়ে বলবো— ১০ টাকার মাস্ক ১২০ টাকা নিচ্ছে। এটা নিয়ে একটা নির্দেশনা দিন। সরকার ইচ্ছা করলে মাস্ক ফ্রি দিতে পারে।’
জবাবে আদালত বলেন, ‘১০ টাকার ১৬ কোটি মাস্ক দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। একটা হতে পারে, যারা কোনও রকমভাবে সন্দেহের মধ্যে বা আক্রান্ত হয়, বা হাসপাতালে যায়, তাদের জন্য ব্যবস্থা করা যায় কিনা, এটা হয়তো বাস্তব।’
এরপর মওদুদ আহমদ বলেন, ‘চিকিৎসক ও নার্সদের পোশাকের বিষয়টি দেখতে হবে। এটা সরকারের স্টকে কত আছে?’
তখন আদালত বলেন, ‘প্রতিবেদনে বলা আছে রোগ প্রতিরোধকারী পোশাক পর্যাপ্ত পরিমাণ আছে।’
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রতিদিনকার সংবাদ সম্মেলন নিয়ে আদালত বলেন, ‘আইইডিসিআর এর একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রেস ব্রিফিং করেন। উনার বক্তব্য আরও পজিটিভ হওয়া বাঞ্ছনীয়। তিনি সারা পৃথিবীর কথা বলেন। মনে হয় আমাদের দেশেও ধেয়ে আসছে। এটা যেন কোনোভাবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি না করে। কারণ, মানুষ যথেষ্ট সচেতন। মানুষের কাছে মোবাইল আছে। মানুষের কাছে সব খবর যায়। এগুলো উনাদের দরকার নেই। উনারা কী করছেন, মানুষ কীভাবে সচেতন হবে এবং কী করা দরকার, সে বিষয়গুলো মানুষকে জানানো দরকার। আর সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটা জানানো দরকার।’
গণমাধ্যমে সচেতনতা প্রচারের বিষয়ে আদালত বলেন, ‘প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে এমনভাবে সচেতনতামূলক বিষয়টি প্রচার করতে হবে, যেন মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়।’
দেশের মানুষ বিদেশে যাওয়া এবং দেশের নাগরিকসহ বিদেশিদের দেশে আগমনের বিষয়ে আদালত বলেন, ‘আমাদের দেশের অনেকে বিদেশে থাকেন। শ্রমিকরা বিভিন্ন দেশে যায়। তাদের সার্টিফিকেট দেওয়ার দরকার হলে যেন সমস্যা না হয়। সেটি খেয়াল রাখতে হবে। আর যারা বিদেশ থেকে আসবেন— তাদের ক্ষেত্রেও সার্টিফিকেট আছে কিনা, সেটা দেখতে হবে এয়ারপোর্টগুলোকে।’
আদালত বলেন, ‘বিষয়টি নজরে রাখলাম। বিষয়টি আগামী ৫ এপ্রিল পরবর্তী আদেশের জন্য রাখা হলো।’
এর আগে গত ৫ মার্চ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।