স্বামী রুমন আলীর পাশে বসে নৌকায় করে বাবার বাড়ি ফিরছিলেন নববধূ সুইটি খাতুন পূর্ণি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর বাড়ি ফেরা হয়নি তার।
সবকিছু শেষ হয়ে যায় নিমিষেই। মেহেদীর রঙ মুছে যাওয়ার আগেই শেষ হয়ে যায় সুইটির স্বপ্ন।
সুইটিদের বহনকারী ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি আকস্মিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তখন নৌকাটি মাঝ পদ্মায়। এ সময় ওঠে প্রচণ্ড ঝড়। মাত্র দেড় মিনিটের ঝড়ো হাওয়ায় অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। একপর্যায়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
নববধূ সুইটির লাশের জন্য পদ্মাপাড়ে অপেক্ষা করছিলেন বর রুমন। শনিবার (০৭ মার্চ) সন্ধ্যায় পদ্মার পাড় থেকে ওই মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আর সুইটি পাশাপাশি বসেছিলাম। নৌকা ডুবে যাবার পর সকলেই বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। এসময় সুইটি আমাকে আকড়ে ধরে। আমাদের উদ্ধারে একটি বালুবাহী ট্রলার এগিয়ে আসে।’
রুমন বলেন, ‘ওই ট্রলার থেকে একটি মোটা রশি ফেলা হয়। ওই সময় সকলেই রশিটি ধরে বাঁচার চেষ্টা করে। আমিও রশিটি ধরার চেষ্টা করি। ধরেও ফেলি। রশি ধরা নিয়ে এসময় সকলে হুড়োহুড়ি করার কারণে সুইটি আমার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার আগ পর্যন্ত সে আমাকে শক্ত করে ধরেছিল। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সে আমাকে ধরে বাঁচার চেষ্টা করেছিল। আমি তাকে ধরে রাখতে পারিনি।’
গত ৬ মার্চ সন্ধ্যায় বিয়ে পরবর্তী অনুষ্ঠান শেষে বরের বাড়ি থেকে কনের বাড়িতে যাওয়ার পথে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো কনেসহ বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।