বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, চীনের উহান থেকে সৃষ্ট করোনা ভাইরাসে ভারতে ২৮ জন আক্রান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের মধ্যে যেকোনো সমাবেশ এড়িয়ে চলার জন্য টুইট বার্তায় আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতে তৈরি হওয়া ঔষধের উপাদানের প্রায় সত্তর শতাংশের জন্য দেশটি চীনের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে চীনে ঔষধ উৎপাদনসহ সামগ্রিক পণ্যের কাঁচামাল তৈরিতে ধ্বস নেমেছে। তারপরই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত এলো।
তবে ভারত সরকার জানিয়েছে, আগামী দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত ঔষুধ তৈরির পর্যাপ্ত কাঁচামাল মুজত রয়েছে।
ভারত কোন প্রক্রিয়ায় ঔষুধ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ যেসব দেশ ভারত থেকে ঔষুধ আমদানি করবে, তারা ঔষধের কাঁচামালের সঙ্কটে পড়তে পারে।
চায়না মার্কেট রিসার্চ গ্রুপের বিশ্লেষক শায়ন রেইন বলছেন,”এমনকি চীনে অনেক ঔষধ তৈরি না হলেও, সেগুলোর মূল উপাদান চীন থেকেই আসে। চীন এবং ভারত উভয়েই যদি নিজেদের সরিয়ে নেয়, তাহলে সারা বিশ্বেই একটি ঘাটতি দেখা দিতে পারে।”
যেসব ঔষধ ও ঔষধের উপাদানের রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত, তা দেশটির ঔষধ রপ্তানি খাতের প্রায় ১০ শতাংশ। এর মধ্যে টিনিডাজল এবং এরিথ্রোমাইসিনের মতো এন্টিবায়োটিক, হরমোন প্রোজেস্টেরন এবং ভিটামিন বি-১২ এর মতো ঔষধ রয়েছে।
অক্সফোর্ড ইকোনমিক্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ স্টিফান ফোরম্যান জানান, এর মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, উপাদানের ওপর কড়াকড়ির কারণে ঔষধের দাম বেড়ে যাবে।
”এর মধ্যেই এমন সব লক্ষণ দেখা যাচ্ছে যে, ভারতের সরবরাহ ঘাটতির কারণে সেখানে ঔষধের দাম বেড়ে যেতে শুরু করেছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ঔষধের ২৫ শতাংশ আর ঔষধ উপাদানের ৩০ শতাংশ আমদানি করা হয়েছে ভারত থেকে।
এফডিএ কমিশনার স্টিফান হান মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটরদের জানিয়েছেন, সংস্থাটি যাচাই করে দেখছে যে, ভারতের এই কড়াকড়ির ফলে আমেরিকার ঔষধ সরবরাহ এবং জরুরি ঔষধের ওপর কী প্রভাব পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ঔষধ কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, তারা তাদের সরবরাহ ব্যবস্থার বিষয়টি তদারকি করে দেখছে।
মার্কিন ঔষধ কোম্পানি মাইলান গত সপ্তাহে জানিয়েছে, ঔষধের একটি সঙ্কট তৈরি হতে পারে।
আরেকটি কোম্পানি ইলি লিলি বলেছে, তারা আশা করছে না, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে তাদের ইনসুলিন উৎপাদনসহ অন্য কোন ঔষধ উৎপাদনে ঘাটতি তৈরি করবে।