চলতি বছর রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় ৮৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিভিন্ন সংস্থা এবং সহযোগী এনজিও যে যৌথ কর্মপরিকল্পনা (জেআরপি) ঘোষণা করেছে, সেখানেই উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে এই অর্থ চেয়েছে জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা প্রায় আট লাখ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকটের কারণে দুদর্শায় পড়া চার লাখ ৪৪ হাজার বাংলাদেশির জন্য ব্যয় হবে এই অর্থ।
সামগ্রিকভাবে মোট আপিলের প্রায় ৫৫ শতাংশই প্রয়োজন হবে খাদ্য, আশ্রয়ণ, নিরাপদ পানি এবং স্যানিটেশনসহ প্রয়োজনীয় জরুরি সেবা প্রদানের জন্য; আর কেবল খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মোট তহবিলের প্রায় ২৯ শতাংশ ব্যয় হবে।
এছাড়া স্থানীয় বাংলাদেশিদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, শিক্ষা, ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি এবং পরিবেশসংক্রান্ত কার্যক্রমগুলো অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
ইউএনএইচসিআরের হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থান এবং ভবিষ্যতে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন- দুই ক্ষেত্রেই তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২০ সালের এই যৌথ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ।
যতদিন না নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন সম্ভব হচ্ছে, ততদিন রোহিঙ্গাদের পাশাপশি বাংলাদেশের সঙ্গে থাকতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম এর মহাপরিচালক আন্তোনিও ভিতোরিনো বলেন, ২০১৭ সালের আগস্টে এ সংকটের সূচনা থেকেই আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো শরণার্থীদের জীবন রক্ষার জন্য জরুরি সহায়তা দিয়ে আসছে।
২০১৯ সালে ক্যাম্পে থাকা সব রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কাজ শেষ হয়েছে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
গত বছর যৌথ কর্মপরিকল্পনায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিল চেয়েছিল জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও সহযোগী এনজিও। এর মধ্যে তারা হাতে পেয়েছিল ৬৫ কোটি ডলার, যা প্রত্যাশার ৭০ শতাংশের মতো।
২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে আসার পর বাংলাদেশে অবস্থানরত বেশিরভাগ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য এটি নির্বাসনের তৃতীয় বছর। রোহিঙ্গারা স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন তারা নিজ দেশে ফেরত যেতে চান; তবে তা নির্ভর করছে তাদের এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা, মৌলিক অধিকার লাভের সুযোগ এবং মিয়ানমারে নাগরিকত্ব প্রাপ্তির নিশ্চয়তার ওপর।