২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:২৫

খাদ্য অধিদফতরে সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ!

রাজধানীর খাদ্য অধিদফতরে সাংবাদিক প্রবেশে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো অফিস আদেশ জারি করা না হলেও সোমবার দিনভর প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি। খাদ্য অধিদফতরের বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এছাড়া অধিদফতরের টেন্ডার, চাল এক গুদাম থেকে অন্য গুদামে পরিবহন, চালকলের নিবন্ধনসহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে তদবিরকারীরা খাদ্য অধিদফতরে আসছেন। তাদের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা না হলেও শুধুমাত্র গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়ে অষোষিত নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোসাম্মৎ নাজমানারা খানুম সোমবার নিজ দফতরে ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের বলেন, ‘খাদ্য অধিদফতরে সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারবেন না- এমন কোনো বিষয় আমার জানা নেই। আমি যখন মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছি, তখন এধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এখন কেনো সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে বিষয়টি আমি দেখব।’

জানা গেছে, সোমবার সকাল ১১টায় গুরুত্বপূর্ণ দু’টি জাতীয় দৈনিকের দু’জন সিনিয়র সাংবাদিক খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদের সঙ্গে দেখা করার জন্য অধিদফতরে যান। ওই দুই সাংবাদিককে নাম, ঠিকানা ও সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে লিপিবদ্ধ করতে বলা হলে তারা সব নিয়ম মেনেই অধিদফতরে প্রবেশ করেন। কিন্তু মহাপরিচালক প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় ওই দুই সাংবাদিক অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন।

একপর্যায়ে মহাপরিচালক ফ্রি হলে তার সঙ্গে দেখা করতে যান ওই দুই সাংবাদিক। কিন্তু মহাপরিচালকের দফতর থেকে বলা হয়, তিনি অন্য একটি বৈঠকে অংশ নিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে যাবেন। তারা মহাপরিচালকের একান্ত সচিব হারুন অর রশিদের সঙ্গে দেখা করার পরামর্শ দেন।

ওই সময় পিএস জানান, ডিজি ব্যস্ত থাকায় তার সাথে দেখা করা সম্ভব না। তিনি পরবর্তী সোমবার যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর ওই দুই সাংবাদিক ডিজির দফতর থেকে বের হয়ে আসেন। এ সময় ডিজির দফতরের সামনে স্থাপিত নতুন ইলেকট্রনিক গেটে দায়িত্বপালনরত জসীমউদ্দীন ও এম এ জলিল সাংবাদিকদের পথরোধ করে জেরা করেন। তারা সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান-‘আপনারা ডিজির কথা বলে অন্য কর্মকর্তাদের রুমে গেলেন কেন? ডিজির রুমে বললে ডিজির রুমেই যেতে হবে। আপনারা অন্য কর্মকর্তাদের রুমে যাওয়ার জন্য পরিচালক প্রশাসনের দফতর থেকে চার্জ করা হয়েছে। কেন প্রবেশ করতে দিয়েছি সে জন্য আমাদের গালমন্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বলে দেয়া হয়েছে ভবিষ্যতে কোনো সাংবাদিককেই খাদ্য অধিদফতরে প্রবেশের অনুমতি না দেয়ার জন্য’।

এ সময় সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কারণে অধিদফতরে যেতেই হবে- জানালে অন্যান্য বিভাগের কর্মচারীরাও সাংবাদিকদের চার্জ করতে থাকেন। এরপর বিষয়টি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে জানানো হয়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা খাদ্য অধিদফতরে গেলে তাদেরকেও বাধা দেয়া হয়।

খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে বর্তমানে আমন সংগ্রহ চলছে। এছাড়া বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া খাদ্য অধিদফতরের টেন্ডার, চাল এক গুদাম থেকে অন্য গুদামে পরিবহন, চালকলের নিবন্ধনসহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে তদবিরকারীরা খাদ্য অধিদফতরে আসছেন। তাদের সঙ্গে তদবিরের দর কষাকষির সুবিধার জন্যই সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে।

প্রকাশ :মার্চ ২, ২০২০ ৬:৫৫ অপরাহ্ণ