দ্বিশতক হাঁকানোর পরে দাম কমলেও শতকের নিচে নামছিল না পেঁয়াজের দাম। দীর্ঘ দুই মাস ধরে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় কেজি দরে দেশি পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে।
এবার পেঁয়াজের বাজারে সুসংবাদ এলো। হুট করেই কেজিতে দাম পড়ল ১৫ থেকে ৩০ টাকা।
পেঁয়াজ রফতানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের খবর ছড়িয়ে পড়লেই বাজারে পেঁয়াজের এই দরপতন হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ভারত থেকে ফের পেঁয়াজ আমদানি শুরু হচ্ছে এমন খবরের প্রভাব পড়েছে দিনাজপুরের স্থলবন্দর এলাকা হিলিতে।
শুক্রবার হিলি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আমদানি ও দেশি দুই পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে বাজারটিতে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হিলি বাজারে আমদানি করা বার্মার পেঁয়াজ একশ’ টাকা থেকে কমে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৮০ টাকার দরের দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও যেসব ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে সেগুলো দাম পড়ে এখন ৬৫ টাকায় নেমে এসেছে।
কোনো পেঁয়াজের দাম বাড়েনি জানিয়ে প্রকাশ করে স্থানীয়রা জানান, মেহেরপুরের সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ আগের মতোই ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এতোদিন পরে পেঁয়াজের দাম কমায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ক্রেতারা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের কষ্ট অনেকটা লাঘব হবে। সামনের দিনে পেঁয়াজের দাম আরও কমলে মধ্যবিত্ত ও নিম্মবিত্তদের খুব উপকার হয়।
মসলাটির দাম আরো কমতে পারে বলে ধারণা করছেন কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আগামী রবিবার বা সোমবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হতে পারে। এ খবরে কৃষকরা তাদের পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছেন। যারা এ মসলাটি স্টকে রেখেছিলেন তারাও সব ছেড়ে দিচ্ছেন। ফলে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। যে কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় এই পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে মানভেদে খুচরা পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা দুদিন আগেও ছিল ১২০ টাকা।
গত সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খুচরাবাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ১৪০ টাকা, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১২০ টাকা ও পাকিস্তানি পেঁয়াজ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
তবে গত সপ্তাহের থেকে প্রতি পাল্লায় (পাঁচ কেজি) ১৫ থেকে ২৫ টাকা কমেছে বলে জানান কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী চাঁন মিয়া।
দাম পড়েছে শোনা গেলেও রাজধানীর বিভিন্ন মুদি দোকানগুলোতে ১০০ টাকা কেজির নিচে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে চান মিয়া বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে। বাজারে প্রচুর পেঁয়াজ রয়েছে, দাম আরও কমবে। দু-একদিনের মধ্যে খুচরাবাজারে এর প্রভাব পড়বে।
কারওয়ান বাজারের মতো একই চিত্র পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে।
গত সপ্তাহের থেকে শুক্রবার প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা করে কমেছে বলে জানিয়েছেন শ্যামবাজারের পাইকার ইদ্রিস আলী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার শ্যামবাজারে পাইকারিতে পাকিস্তানি পেঁয়াজের কেজি ৫২-৫৩ টাকা, নেদারল্যাল্ডের ৫৫-৬০ টাকা, মিয়ানমারের ৬০-৭৫ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজের কেজি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।