দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার সর্বশেষ প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশনা অনুসারে বুধবার আদালতের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর এই প্রতিবেদন জমা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. সাইফুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আদালত এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি করবেন।
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার সর্বশেষ প্রতিবেদন দাখিল নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিকাল পাঁচটার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর ওই প্রতিবেদন দাখিল এবং পাশপাশি মামলার শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করা হয়েছিল। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালত তার আদেশে বলেছিলেন- খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য পূর্বে যে বোর্ড গঠিত হয়েছিল, সেই বোর্ডের অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের সুপারিশ অনুসারে খালেদা জিয়া তার চিকিৎসা করাতে সম্মতি দিয়েছেন কিনা, যদি সম্মতি দিয়ে থাকেন তাহলে সুপারিশ অনুসারে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছি কিনা এবং তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা কী তা জানাতে বলা হয়েছে বিএসএমএমইউ উপাচার্যকে।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন, মো. মাসুদ রানা, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান প্রমুখ।
আর দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।
১৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) এই আবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন।
এর আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ মামলায় তার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। তবে আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) যদি সম্মতি দেন তাহলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই সাজা বাতিল চেয়ে গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। শুনানি নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের দেওয়া জরিমানার আদেশ স্থগিত করেন। এ ছাড়া বিচারিক আদালতে থাকা মামলার নথি তলব করেন হাইকোর্ট।
গত ২০ জুন মামলার নথি হাইকোর্টে আসার পর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আদালতে তুলে ধরেন তার আইনজীবীরা। গত ৩১ জুলাই জামিন আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে জামিন চেয়ে বিফল হয়ে গত ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া। এই জামিন আবেদনের শুনানিতে গত ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার সবশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কে জানাতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে মেডিকেল রিপোর্ট ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। ৫ ডিসেম্বর মেডিকেল প্রতিবেদন জমা না পড়ায় শুনানি পিছিয়ে ১২ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য করেন আদালত।