বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার জ্যেষ্ঠ পুত্র ইশরাক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল- জনগণ হবে দেশের মালিক, জনগণ হবে ক্ষমতার মালিক। আমি মুক্তিযুদ্ধের সেই চতেনা ধারণ ও বিশ্বাস করি।’
গত ১৮ দিন ধরে তার নির্বাচনী প্রচারণার কাজ নিরলসভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমগুলোকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ইশরাক বলেন, ‘ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে বসবাস অযোগ্য নগরী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। বায়ু দূষণ, নারী-শিশুদের জন্য অনিরাপদ শহরের তালিকায়ও ঢাকা এক নম্বরে।’
‘আমি ঢাকার সন্তান। এই সমস্যাগুলোর মধ্য দিয়ে ঢাকাবাসির সঙ্গে আমিও বেড়ে উঠেছি। এ সমস্যাগুলো আমার জানা। নির্বাচিত হলে এই শহরকে বাসযোগ্য করার জন্য যা যা করণীয় সবই করব। জনগণের খেদমত এবং নগরবাসীর উন্নয়নে আমি নিজেকে উৎসর্গ করে দিব।’
বিএনপিকে উদার গণতান্ত্রিক দল উল্লেখ করে ইশরাক বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে এবং নির্বাচনী ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। তাই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হোক সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। ইভিএমের কার্যকারিতা নিয়ে আমাদের দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় জানানো হয়েছে।’
গোপীবাগে রবিবার তার নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন গত আঠারো দিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণ প্রচারণা চালিয়ে আসছি। বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছি, এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা জেনেছি। সবাই আমাকে সাদরে গ্রহণ করেছেন। ওইসব এলাকায় আওয়ামী লীগ এবং তাদের সমর্থিত কাউন্সিলরদের সাথে আমি দেখা করেছি, কথা বলেছি, মতবিনিময় করেছি। কিন্তু গতকাল প্রচারণা শেষে ৪১ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর-এর নির্বাচনী প্রচারণার ক্যাম্পের সামনে দিয়ে আসার সময় অতর্কিতভাবে আমাদের উপর হামলা চালানো হয়। এতে তিনজন সাংবাদিকসহ ১২ জন নেতাকর্মী আহত হন।’
হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযোগ করে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমরা গতকাল থেকে আশঙ্কা করেছিলাম যে, আমাদের নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু করবে। সেটাই হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমাদের প্রায় পাঁচ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওয়ারী থানায় আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটা মামলা করা হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল আমরা নির্বাচন কমিশনকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের প্রতি আহবান জানাবো নির্বাচনের প্রচারণা সমানভাবে করার সুযোগ আমাদের দেয়া হোক। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে।’
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ সাম্পতিক বছরগুলোতে সিটি করপোরেশন যারা পরিচালনা করেছেন জনগণ তাদের প্রতি বিক্ষুব্ধ। তাই জনগণ পরিবর্তন চায়।
ইশরাক হোসেনের গণসংযোগে হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটিতেই কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা হচ্ছে। এটা কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না। প্রত্যেকটি হামলার ঘটনার ব্যাপারে আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ শ্যামল দত্তের পরিচালনায় সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, ডেইলি অবজারভার -এর সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবদুস শহীদ বক্তব্য রাখেন। বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজে সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সাবেক সাধারন সম্পাদক বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর ফারুক, যুগ্ম সম্পাদক শাহেদ চৌধুরী ও মাঈনুল আলম, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।