২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:০৯

নাইজেরিয়ায় মহামারি আকার নিয়েছে লাসা জ্বর, নিহত ২৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীন থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে এবার পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় মহামারি আকার নিয়েছে লাসা জ্বর। চলতি মাসে এই জ্বরে দেশটিতে অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। দেশজুড়ে এটি ছড়িয়ে পড়া নিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

নাইজেরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৪ জানুয়ারি (শুক্রবার) পর্যন্ত লাসা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯৫ জন। এতে ওইদিন পর্যন্ত অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির এগারোটি প্রদেশে এটি ছড়িয়ে পড়েছে। খবর আল জাজিরার।

লাসা জ্বরের সংক্রমণ ক্রমবর্ধমান হওয়ায় এ বিষয়ে জরুরি সেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। সরকারিভাবে যথাসম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নাইজেরিয়া সরকার।

এর আগে ২০১৫ সালের আগস্টে নাইজেরিয়ায় লাসার ব্যাপক সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল। নাইজেরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (এনসিডিসি) তথ্য মতে, সেসময় নাইজেরিয়ার ১৯টি ভিন্ন রাজ্যে লাসা জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করা হয়েছিল।

লাসা জ্বর কী এবং কীভাবে ছড়ায়?

আমেরিকার ন্যাশনাল লাইব্রেরী মেডিসিন (এনএলএম) এর তথ্য অনুযায়ী, ইবোলা ভাইরাসের মতো লাসা ভাইরাস ভাইরাল হেমারেজিক জ্বর তৈরি করে। দুই ধরনের ভাইরাসের কারণে এই ধরনের রোগ দেখা দেয়। ভাইরাস দুইটির নাম- মারবার্গ ভাইরাস এবং ইয়েলো ফিভার ভাইরাস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, লাসা জ্বরের লক্ষণ খুব ধীরে ধীরে প্রকাশ হতে থাকে। জ্বর, দূর্বলতা এবং অস্বস্তির মতো সাধারণ লক্ষণ প্রকাশের সঙ্গে শুরু হয় লাসা। এই সকল উপসর্গের কয়েকদিন পর থেকে গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা, পেশী ব্যথা, বুকে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং বমির মতো উপসর্গগুলো দেখা দেয়।

অবস্থা অনেক গুরুতর আকার ধারণ করলে মুখ ফুলে যাওয়াসহ মুখ, নাক, যোনি বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট থেকে রক্তপাত ও নিম্ন রক্তচাপের মতো সমস্যাগুলো দেখা দেয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে রোগের প্রকোপ গুরুত্বর হলে ১৪ দিনের মধ্যে রোগীর মৃত্যু ঘটে। লাসা জ্বরটি ২৮-৪০ সপ্তাহের গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর। গর্ভাবস্থায় লাসা জ্বরে আক্রান্ত হলে প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে মাতৃ মৃত্যু অথবা গর্ভপাত ঘটে। লাসা জ্বরের প্রাথমিক পর্যায়ে এন্টিভাইরাল ড্রাগ রিবাভীরি কার্যকর।

নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় লাসা শহরে এই ভাইরাসটি আবিষ্কার করা হয় ১৯৬৯ সালে। পরবর্তি সময়ে শহরটির নামানুসারে ভাইরাসটির নামকরণ করা হয়।

লাসা ভাইরাসটি মস্তোমিস নামক আফ্রিকান এক প্রকার ইঁদুরের চর্বি ও লালার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। সংক্রামিত ইঁদুরের মূত্র বা মূত্রের সংস্পর্শে আসার মাধ্যমেই মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। একইসাথে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের যেকোন ধরনের ফ্লুইডের (রস)  সংস্পর্শে আসার মাধ্যমেও লাসা জ্বর ছড়িয়ে থাকে।

প্রকাশ :জানুয়ারি ২৭, ২০২০ ৫:৪১ অপরাহ্ণ