মধ্য আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডি গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে ৭ বার! গোল হজম করেছে দুটি। অন্যদিকে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে ৩ বার। হজম করেছে ২টি! বুরুন্ডি অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে এসেছে। বাংলাদেশ এসেছে রানার্স-আপ হয়ে। তাইতো দ্বিতীয় সেমিফাইনালে এগিয়ে রাখা হচ্ছে বুরুন্ডিকে। যারা শুধু ফিফা র্যাঙ্কিংয়েই বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে নয় (বুরুন্ডি ১৫১, বাংলাদেশ ১৮৭), মাঠের পারফরম্যান্সেরও এগিয়ে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের এবারের আসরে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আক্রমণাত্মক দল তারা। তাদের আক্রমণভাগ বেশ শক্তিশালী। শারীরিকভাবেও তারা বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের চেয়ে এগিয়ে। দমও বেশি। তাইতো তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ আক্রমণাত্মক খেলার সাহস দেখাতে পারছে না। আজ রক্ষণাত্মক পন্থা অবলম্বন করে পাল্টা আক্রমণের ভরসায় খেলবে জামাল-সাদরা।
যেমনটা বলেছেন বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে, ‘এই টুর্নামেন্টে আসলে অনেক কঠিন সমস্যার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি আমরা। সেগুলো উতরেছিও। তাই রক্ষণভাগের সমস্যাটাও আমাদের উতরাতে হবে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যদিও আমাদের কয়েকজন ডিফেন্ডার নেই। তাই ম্যাচটা কঠিন হয়ে গেছে। ওদের ফরোয়ার্ড লাইন আমাদের রক্ষণের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে। তবে ডিফেন্ডারদের সেই চ্যালেঞ্জ জিততে হবে এবং দ্রুতগতির কাউন্টারে আমাদের সুযোগ নিতে হবে শেষ ম্যাচের মতো।’
রক্ষণাত্মক খেলার ক্ষেত্রেও যে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে অসুস্থতা আর লাল কার্ড। বাংলাদেশের রক্ষণভাগের পরীক্ষিত সৈনিক ইয়াসিন খান ও টুটুল হোসেন বাদশা নেই অসুস্থ্যতার। তার উপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড (লাল) দেখে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন অভিজ্ঞ তপু বর্মন। তাই তাদের ছাড়াই বুরুন্ডির মতো দলের আক্রমণ সামাল দিতে হবে বাংলাদেশকে।
এক্ষেত্রে অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া আত্মবিশ্বাসের রসদ খুঁজছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের ম্যাচ থেকে, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষ আমরা বেশ ভালো খেলেছি। ওই ম্যাচ আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। অবশ্য সেমিফাইনাল ম্যাচটি হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বুরুন্ডি খুব শক্তিশালী এবং তাদের গোল করার সক্ষমতা বেশি। ম্যাচে আমাদের অনেক সতর্ক থাকতে হবে। কৌশল মেনে সেরাটা খেলতে পারলে আমাদের জন্যও দুর্দান্ত কিছু অপেক্ষা করছে।’
মধ্য আফ্রিকার বুরুন্ডি অবশ্য বাংলাদেশের মতো এতোশত ভাবছে না। তারা তাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে চায়। তাদের আক্রমণাত্মক ফুটবলের দর্শনেই বিশ্বাসী থাকতে চায়। যেমন বলেছেন বুরুন্ডির কোচ জসলিন বিফুসা, ‘আক্রমণ করে খেলা এবং রক্ষণ করা। আমাদের ফুটবলের দর্শন হল এটা। আশা করি এই ফুটবল খেলে আমরা এই ম্যাচেও ফল পাব। জিতে ফাইনালে উঠব। যদিও বাংলাদেশ স্বাগতিক হিসেবে সুবিধা পাবে। তাদের অনেক দর্শক থাকবে। তবে এসব কোনো কিছুই আমাদের ভাবনার বিষয় নয়। এরকম সেমিফাইনাল, ফাইনাল ম্যাচ আমরা আগেও অনেক খেলেছি।’
শেষ পর্যন্ত বুরুন্ডির এমন হুংকারের জবাব বাংলাদেশ দিতে পারে কি? পারবে কি বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ষষ্ঠ আসরে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠতে? নাকি আরো একবার ফাইনালে দর্শক হয়ে যাবে আয়োজকরা? জানতে অপেক্ষা করতে হবে রাত পর্যন্ত।